বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী ফয়জুল করীমকে ঘুষি মারার খবর শুনলেও তার দেহে রক্তক্ষরণ দেখেননি বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সোমবার খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে রাজধানীতে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সিইসি বলেন, ‘রক্তাক্ত… এখন সব কিছু তো আপেক্ষিক। উনি কি ইন্তেকাল করেছেন? আমরা ওনার রক্তক্ষরণ দেখিনি। যতটা শুনেছি ওনাকে পেছন থেকে কেউ ঘুষি মেরেছে।’
সোমবার দুপুরে বরিশাল নগরের চৌমাথা এলাকায় হাতপাখা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
ফয়জুল করীমের বরাত দিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মিডিয়া উপ-কমিটির সদস্য কে এম শরীয়াতউল্লাহ জানান, ছাবেরা খাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার পর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথার কাছে ৩০ থেকে ৪০ জন নৌকার সমর্থক তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় তারা লাঠিসোঁটা ও পাথর ব্যবহার করে। তার সঙ্গে থাকা বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী এ সময় আহত হন।
একটি দলের মেয়র প্রার্থীকে মেরে রক্তাক্ত করা হয়েছে। তাহলে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ বলা যায় কী-এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘ওনার বক্তব্য শুনেছি। উনি বলেছেন যে ভোট বাধাগ্রস্ত হচ্ছে না। ওনাকে আক্রমণ করা হয়েছে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে খবর নেয়ার চেষ্টা করেছি ওই কারণে যে ভোটদান কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়েছে কি-না। আমরা যে খবর পেয়েছি, ভোট কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়নি।
‘ওনাকে আহত করার ঘটনায় আমরা তাৎক্ষণিক পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক, রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দায়-দায়িত্ব নিরূপণ করার পর পুলিশ ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে। পরবর্তীতে হয়তো আমরা আরও নির্ভরযোগ্য তথ্য পাব।’
ওই ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কি-না- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে তাৎক্ষণিক কথা হয়েছে। ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আমরা সুস্পষ্ট তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত আপনাদের কোনো তথ্য দিতে পারব না। অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
হাতপাখার প্রার্থীকে খানিকটা আঘাত করা হয়েছে জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘সেটা উত্তেজনার সৃষ্টি করেছিল। সে উত্তেজনা হয়তো এখনও পুরোপুরি প্রশমিত হয়নি। আমাদের এখান থেকে বলা হয়েছে যে নির্বাচন-উত্তর কোনো উচ্ছৃঙ্খল আচরণ যেন করা না হয়। কারণ ভোটের ফল ঘোষণার পরও অনেক সময় এরকম ঘটনা ঘটে থাকে। সে প্রস্তুতি আমাদের আছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে আছে। এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না।’
খুলনা ও বরিশাল সিটি নির্বাচনে কত শতাংশ ভোট পড়েছে জানতে চাইলে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘যতটুকু তথ্য পেয়েছি তাতে খুলনায় ৪২ থেকে ৪৫ শতাংশ ভোট কাস্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর বরিশালে ভোট পড়েছে আনুমানিক ৫০ শতাংশ। তবে এসব তথ্য চূড়ান্ত নয়, কম-বেশি হতে পারে। পুরোপুরি সঠিক তথ্য এখনই দিতে পারব না।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে সিইসি বলেন, ‘আজকে আপনারা সবকিছু দেখেছেন। আমার যে পর্যবেক্ষণ তাতে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া ভোট সার্বিকভাবে সুন্দর ও সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বেশ সুশৃঙ্খল ও আনন্দমুখর পরিবেশে ভোট হয়েছে। আমরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি।’