চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) কার্যনির্বাহী কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ রুবেল খানের আড়াই বছরের শিশু কন্যা রাফিদা খান রাইফা হত্যা মামলার তদন্ত কার্যক্রম দ্রুত শেষ করে চার্জশিট প্রদানের দাবিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছেন সিইউজে নেতৃবৃন্দ।
রোববার (১১ জুন) দুপুরে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানার কাছে স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন সিইউজে সভাপতি তপন চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম। এসময় রাফিদা খান রাইফার পিতা ও সিইউজের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ রুবেল খান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) নির্বাহী সদস্য আজহার মাহমুদ, সিইউজের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সরওয়ার কামাল, নির্বাহী সদস্য আলাউদ্দিন হোসেন দুলাল, সিইউজের সদস্য ও দৈনিক আমাদের সময়ের ব্যুরো প্রধান হামিদ উল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালের ২৯ জুন রাতে চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতাল ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা, অদক্ষতার কারণে সাংবাদিক মোহাম্মদ রুবেল খানের আড়াই বছরের শিশু কন্যা রাফিদা খান রাইফা মারা যায়। রাইফার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় রাইফার বাবা মোহাম্মদ রুবেল খান বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ২০ জুলাই ৪ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন- ডা. বিধান রায় চৌধুরী (৫০), ডা. দেবাশীষ সেনগুপ্ত (৩২), ডা. শুভ্র দেব (৩২) ও ডা. লিয়াকত আলী (৫৭)।
রাইফার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল শাখার তৎকালীন পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম ম্যাক্স হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম তদন্ত করে। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি রাইফার মৃত্যুর জন্য চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা, অদক্ষতাকে দায়ী করে তিন চিকিৎসককে অভিযুক্ত করে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপরিশ করে। এছাড়া হাসপাতালের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা তুলে ধরে। একই ভাবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের তদন্ত কমিটি হাসপাতালটির ১১টি ত্রুটি চিহ্নিত করে। রাইফার অকাল মৃত্যুর পর ম্যাক্স হাসপাতালে র্যাবের ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত হয়। ওই অভিযানে নানা অনিয়মের দায়ে ম্যাক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করা হয়।
সিইউজে সভাপতি তপন চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম বলেন, মর্মান্তিক এই ঘটনার দীর্ঘ পাঁচ বছর অতিবাহিত হতে চললেও এখন পর্যন্ত মামলাটির তদন্ত এখনও পর্যন্ত ঝুলে আছে। এই মামলার তদন্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে।
মামলার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বাদীর ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে পিবিআই সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে মন্তব্য করেন সাংবাদিক নেতারা।