সোমবার (২২ মে) দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া এ তথ্য জানান।
অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, অভিভাবকদের রাত জেগে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজের কথা বলত ১২ থেকে ১৮ বছরের কিশোরী-তরুণীরা। অভিভাবকরা নিশ্চিতে থাকতেন তাদের সন্তান ফ্রিল্যান্সিং করছে। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিংয়ের আড়ালে তারা অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি-ভিডিও দিতে বাধ্য হতো।
সিআইডি প্রধান বলেন, গ্রুপটি পটি আপত্তিকর ভিডিও ভাইরালের ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে কেবল টাকাই নয়, চক্রটি ওই সব ভিডিও দেশে-বিদেশে বিক্রি করেও কোটি কোটি টাকা আয় করেছে।
সিআইডি বলেন, ভুক্তভোগী তরুণীদের সাবেক প্রেমিকেরাই নতুন নতুন কনটেন্ট দিতেন পমপম গ্রুপে। অর্থাৎ সুসময়ের প্রেমিকার যেসব অন্তরঙ্গ মুহূর্তে তারা ক্যামেরাবন্দি করেছেন সেগুলোই দিতেন মার্ক-সাকারবার্গদের গ্রুপে। মার্ক তার অ্যাডমিনদের দিয়ে সেসব ফেসবুক আইডি থেকে ছবি নিয়ে ৩০-৪০ সেকেন্ডের প্রমো বানিয়ে আপলোড করতেন গ্রুপগুলোতে।
সিআইডি প্রধান বলেন, মার্ক ওরফে সায়েম, অভ্র ও শাকিলকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তাদের ডিভাইস তল্লাশি করে মার্ক-সাকারবার্গের বিভিন্ন পেজের অ্যাডমিনদের আসল পরিচয় জানা গেছে। তার সবচেয়ে বিশ্বস্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ডিটিআর শুভ ওরফে মশিউর রহমান। মশিউরের দায়িত্ব ছিল গ্রুপ থেকে কৌশলে কনটেন্ট সংরক্ষণ করে রাখা এবং নানা প্রলোভনে তরুণীদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও হাতিয়ে নেওয়া। মশিউর চট্টগ্রামের একটি ফিশিং কম্পানিতে চাকরি করেন। অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাকে কর্ণফুলী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সায়েম ও মশিউরকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে সিআইডি প্রধান বলেন, এ অ্যাডাল্ট গ্রুপগুলোর অ্যাডমিনদের অনেকেই ঢাকায় অবস্থান করছেন। ফলে তাদের বেইলি রোড এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে গেট টুগেদারের ফাঁদ পাতা হয়। ফাঁদে পা দেওয়ায় একে একে গ্রেপ্তার করা হয় অ্যাডমিন ক্যাকটাস ওরফে কেতন চাকমা, এল ডোরাডো ওরফে শাহেদ, তুর্য ওরফে মারুফ এবং মিঞা ভাই ওরফে নাজমুল সম্রাটকে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
এ ঘটনায় মানি লন্ডারিং তদন্ত করারও পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান সিআইডি প্রধান। কেবল টেলিগ্রাম চক্রের হোতারাই নয়, ফলো দ্য মানি করে তাদের দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা সহযোগীদেরও আইনের আওতায় আনা যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।