ঢাকাশনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

৫ বিলিয়ন ডলারের মানবসৃষ্ট চাঁদ দুবাইয়ে !

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মে ২১, ২০২৩ ১০:৫২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সম্প্রতি দুবাই মানবসৃষ্ট চাঁদ তৈরির জন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যদিয়ে মানুষ চন্দ্রপৃষ্ঠে ভ্রমণের স্বর্গীয় অনুভূতি পৃথিবীতে বসেই উপভোগ করতে পারবে।

কানাডিয়ান উদ্যোক্তা মাইকেল হেন্ডারসন দুবাইতে ৩০ মিটার (১০০ ফুট) উঁচু একটি বিল্ডিংয়ের উপরে চাঁদের একটি ২৭৪-মিটার (৯০০ ফুট) প্রতিরূপ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছেন। আগে থেকেই বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন এবং বিস্ময়কর বিভিন্ন স্থাপত্যকর্ম সমৃদ্ধ দুবাইকে এটি আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলবে।

মূলত চাঁদের মতো দেখতে একটি সুবিশাল রিসোর্ট তৈরি করা হচ্ছে দুবাইয়ের একটি অভিজাত এলাকায়। দূর থেকে চাঁদ দেখতে যেমন হেন্ডারসনের ‘দুবাই মুন’ ঠিক তেমনি দেখাবে।

হেন্ডারসন অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেছেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় ‘ব্র্যান্ড’ আমাদের,  স্বর্গীয় অবয়ব হিসেবে চাঁদ নিজেই নিজের ব্র্যান্ড। ‘আট বিলিয়ন মানুষ আমাদের ব্র্যান্ড চেনে। তবে আমরা এখনও রিসোর্টের কাজ শুরু করিনি।’

পৃথিবীর সব মানুষই এটি পছন্দ করবে। এখানে হাঁটলে হবে যেন চাঁদের বুকে হাঁটছেন।

হেন্ডারসনের পরিকল্পনা অনুযাযী গোলাকার কাঠামোর ভিতরে একটি রিসোর্ট থাকবে। যাতে একটি চার হাজার রুমের হোটেল, ১০ হাজার মানুষ বসার মতো হলরুম এবং ‘লুনার কলোনি’র মতো বিস্তৃত এলাকা থাকবে। এখানে হাঁটলে হবে যেন চাঁদের বুকে হাঁটছেন। রাতে চাঁদের মতোই জ্বলজ্বল করবে এই রিসোর্ট।

হেন্ডারসন মে মাসের শুরুতে দুবাইয়ে অ্যারাবিয়ান ট্রাভেল মার্কেটে প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন।

ইতোমধ্যেই শিল্পীদের পারিশ্রমিক নির্ধারণ করে  মুন ওয়ার্ল্ড রিসোর্ট তৈরির পরিকল্পনা শুরু করা হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন ৮২৮ মিটার (দুই হাজার ৭১০ ফুট) বুর্জ খলিফার মতো এটিও প্রচণ্ড ব্যয়বহুল একটি প্রকল্প।

অনেকে এটিকে মানবসৃষ্ট দুবাই পার্ল এর মতো ব্যর্থ প্রকল্প বলে অভিহিত করেছেন। দুবাই পার্ল বিশ্বের সবথেকে বড় মানুষ নির্মিত দ্বীপ, যেটিকে ছোট ছোট দ্বীপ বানিয়ে পাম গাছের মতো সাজানো হয়েছে। দুবাই পার্ল দ্বীপটি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

দ্য পার্ল ও পাম জেবেল আলি দুবাইয়ের সবচেয়ে ‘ব্যয়বহুল’ দুটি প্রকল্প। যেগুলো দেশটিতে ২০০৯ সাল থেকে আর্থিক সঙ্কট সৃষ্টি করেছে, যা শেখদের শাসন ক্ষমতায় প্রভাব ফেলে এবং দুবাই সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিকে ২০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করে।

প্রায় ১৫ বছর পরে, দুবাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

দুবাইয়ের বিশিষ্ট রিয়েল এস্টেট এজেন্সি অলসপ অ্যান্ড অলসপ এর সিইও লুইস অলসপ বলেছেন, ‘২০০৯ সালের তুলনায় দুবাই সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিস্থিতিতে রয়েছে।’

চাঁদ প্রকল্পে একটি সম্ভাব্য ক্যাসিনোর জন্যও স্থান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

অন্যান্য আরব উপদ্বীপের মতো সংযুক্ত আরব আমিরাতেও জুয়া নিষিদ্ধ। তবে সিজার প্যালেসের মতো বড় ব্র্যান্ডগুলো ইতোমধ্যেই দুবাইতে আছে বা ভবিষ্যতে দুবাইতে ঘাটি গাড়বে বলে শোনা যায়।

ওয়েন রিসোর্ট ২০২৭ সালে দুবাইয়ের উত্তরে রাস আল-খাইমাহতে তিন দশমকি ৯ ডলার ব্যয়ে রিসোর্ট তৈরির পরিকল্পনা করেছে, যাতে জুয়া খেলার ব্যবস্থা থাকবে। যার অর্থ দেশটির আইনে পরিবর্তন আসতে পারে।

মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টোফার ডেভিডসন বলেছেন,অন্যান্য হাই-প্রোফাইল চোখ ধাঁধানো আশ্চর্যের মতো দুবাই মুন দুবাইয়ের অভিজাত শাসকদের চিত্তবিনোদনে ভূমিকা রাখবে।

ক্রিস্টোফার ডেভিডসন ‘শেখ থেকে সুলতানবাদ’ নামে সম্প্রতি একটি বই লিখেছেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের মহাকাশ কেন্দ্রও দুবাইতে অবস্থিত। যা মঙ্গল গ্রহে একটি মহাকাশযান পাঠিয়েছিল এবং চাঁদে রোভার স্থাপনের চেষ্টা করে ব্যর্থ  হয়েছে।

ডেভিডসন বলেন, ‘তাদেরকে যদিও একটি অগণতান্ত্রিক অভিজাত বলা যায়, তবে তারা বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। তাদের হাতে নেওয়া মেগাপ্রকল্পগুলো দেখে তা বোঝা যায়।’