কক্সবাজার শহরের পর্যটন জোনের কলাতলী আবাসিক হোটেল-মোটেল এলাকার টর্চার সেল থেকে অপহৃত নারী ও শিশুসহ পাঁচজনকে উদ্ধার করেছে র্যাব-১৫। এ ঘটনায় পুলিশের বহিষ্কৃত এসআইসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
গত শুক্রবার রাতে সেখানে অভিযান চালানো হয়। আটক বহিষ্কৃত এসআইয়ের নাম এস এম ইকবাল পারভেজ।
তাঁর বাড়ি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার মাইতুল সরকারবাড়ী এলাকায়। তিনি ২০২১ সালে ইয়াবাসহ র্যাবের হাতে আটকের পর বহিষ্কৃত হন। তাঁর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলাও আছে। আটক অন্য দুজন হলেন কক্সবাজার পৌরসভার নতুন বাহারছড়া এলাকার এম টি মুন্না ও মো. ইউসুফ।
এম টি মুন্না সম্পর্কে ইকবালের শ্যালক।র্যাব-১৫-এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী জানিয়েছেন, কক্সবাজারকেন্দ্রিক ভয়ংকর এক অপহরণ সিন্ডিকেটের অবস্থান শনাক্তের পর শুক্রবার রাতে একের পর এক তাঁদের গোপন আস্তানায় অভিযান চালিয়ে সেখানে বন্দি নারী ও শিশুসহ পাঁচ অপহৃতকে উদ্ধার করেছে র্যাব। এ সময় চক্রের মূল হোতা ইকবাল পারভেজসহ তিনজনকে আটক করা হয়।
তিনি জানান, কক্সবাজার র্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীমের নেতৃত্বে র্যাবের একটি দল কক্সবাজার শহরের কলাতলী ও সুগন্ধা এলাকায় রাতভর এই অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ঢাকার মো. শাহজাহান কবির ও মঞ্জুর আলম কক্সবাজারে বেড়াতে এসে গত ১৬ মে নিখোঁজ হন। পরে একটি মোবাইল নম্বর থেকে কল করে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরিবারের তরফ থেকে আংশিক মুক্তিপণ পরিশোধ করা হলেও মুক্তি মেলেনি শাহজাহান ও মঞ্জুরের।
তিনি বলেন, কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা অপহৃত এক দম্পতির গল্প ভয়ংকর। দাবীকৃত টাকা না পেয়ে স্বামীর হাত-মুখ বেঁধে স্ত্রীকে ধর্ষণ করতে থাকেন চক্রের সদস্যরা।
অপহৃত ব্যক্তিদের স্বজনরা বিকাশে দুই লক্ষাধিক টাকা মুক্তিপণ দিলেও তাঁদের ছাড়া হয়নি। স্বজনরা বিষয়টি র্যাবকে অবহিত করলে তারা গোয়েন্দা উপাত্ত ব্যবহার করে কাজ শুরু করে। এরপর সন্ধান মেলে দুটি ভয়ংকর টর্চার সেলের। যার একটি কলাতলী এবং অন্যটি সুগন্ধা পয়েন্টে।
এর আগে গত আগস্ট মাসের শুরুতে কক্সবাজার শহরের হোটেল-মোটেল জোনে কটেজ এলাকায় আরেকটি ‘টর্চার সেলের’ সন্ধান পেয়েছিল ট্যুরিস্ট পুলিশ। তখন পর্যটকসহ চারজনকে উদ্ধার ছাড়াও ১১ জনকে আটক করা হয়েছিল।