বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকেই রক্ষা পেয়েছে কক্সবাজারের ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প। জলোচ্ছ্বাসে নয় কেবল বাতাসের প্রচণ্ডতায় ক্যাম্পগুলো লণ্ডভণ্ড হওয়ার শঙ্কা করা হলেও বাস্তবে তেমন হয়নি। এমনকি পাহাড়ের অনেক চূড়ায় থাকা রোহিঙ্গা বস্তিগুলোও রক্ষা পাওয়ায় অনেকের কাছে তা যেন অবিশ্বাস্য হয়ে উঠেছে। কর্মকর্তারা মনে করছেন, বাস্তবে বাতাসের প্রচণ্ডতা না থাকায় অক্ষত রয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প। তবুও অন্তত হাজার খানেক বস্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে রোহিঙ্গা প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে মনে করছেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার ও সরকারের উপসচিব সামছুদ্দৌজা নয়ন জানান, ‘তেমন বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি। যা টুকটাক হয়েছে তাও মেরামতযোগ্য।’ কমিশনার কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব প্রীতম সাহা এ বিষয়ে বলেন, কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক লাখ ৯০ হাজার বস্তির মধ্যে প্রাথমিক তথ্যে মাত্র হাজার খানেক বস্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ পেতে আরো সময় লাগবে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবকালে অতিবর্ষণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসের আশঙ্কা করা হলেও ছোটখাট কয়েকটি ছাড়া বড় ধরনের ধস হয়নি। কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব প্রীতম সাহা এ বিষয়ে জানিয়েছেন, রবিবার ৩টি পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এগুলো হচ্ছে উখিয়ার বালুখালী ১০ নম্বর ক্যাম্পে একটি, ৯ নম্বর ক্যাম্পে একটি ও ১৮ নম্বর হাকিম পাড়া ক্যাম্পে একটি পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। তিনটি ঘটনায় পাঁচজন রোহিঙ্গা সামান্য আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি। কর্মকর্তা বলেন, বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় পাহাড়ের মাটি নরম হয়নি এ কারণে বড় ধরনের ধ্স থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে।
কক্সবাজারের আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান বলেন, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রবিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৩০ মিলিমিটার। সেই সঙ্গে বাতাসের গতিবেগ কক্সবাজারে সর্বোচ্চ ছিল ঘণ্টায় ৭৫-৮০ কিলোমিটার। তবে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে আজ রবিবার দুপুর ২টার দিকে সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ রেকর্ড করা হয়েছে।
রোহিঙ্গা নেতা দুর্যোগে ক্ষতি কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে জানান, রোহিঙ্গা প্রশাসনের কর্মকর্তারা গত কয়েকদিন ধরে এনজিও, সরকারি কর্মকর্তা এবং রোহিঙ্গা কমিউনিটির লোকজন নিয়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করেছেন। যার ফলে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে রোহিঙ্গাদের মধ্যে অনেক সচেতনতা সৃষ্টি করা হয়েছে। ঝড় যখন বয়ে যাচ্ছিল তখন ক্যাম্পগুলোর কোনো রোহিঙ্গাই এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করেনি। ফলে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে।