ঢাকামঙ্গলবার, ১লা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বন্ধ হলো সরকারি টাকায় হজে পাঠানো

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মে ১২, ২০২৩ ১১:১৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

প্রতিবছরই কয়েক শ মানুষকে রাষ্ট্রীয় খরচে পবিত্র হজ পালনের জন্য পাঠানো হয়। এ প্রক্রিয়ায় গত বছরও বঙ্গভবন, গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনীতিক, সাংবাদিক, মসজিদের ইমামসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২৫৪ জনকে হজে পাঠানো হয়েছিল। এখন থেকে আর সরকারি টাকায় হজ পালন করা যাবে না। চলতি বছর থেকেই এই সুযোগ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। 

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘এবার থেকে সরকারি টাকায় আর হজের সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে।’

করোনা-পরবর্তী পরিস্থিতি, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কারণে নেওয়া এ সিদ্ধান্তে প্রতিবছর সরকারের অন্তত ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

রাষ্ট্রীয় খরচে হজযাত্রী পাঠানোর বিষয়টি বিদ্যমান হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালাতেই আছে। এই বিধিমালার ২৪ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘সরকার প্রয়োজনীয়সংখ্যক অসচ্ছল ব্যক্তিকে হজ করিবার উদ্দেশ্যে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করিতে পারিবে। পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার এই সহযোগিতার পরিমাণ নির্ধারণ করিতে পারিবে।’ এর ভিত্তিতেই প্রতিবছরই কয়েক শ মানুষ রাষ্ট্রীয় খরচে হজে যাচ্ছেন। কয়েক দশক ধরেই এই চর্চা চলে আসছে।

হজ ব্যবস্থাপনা বিধিমালায় অসচ্ছল মুসলমানদের এই সুযোগ দেওয়ার বিধান থাকলেও অসচ্ছলরা সুযোগ পান খুবই কম। মূলত সরকারের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনীতিক, সাংবাদিক, মসজিদের ইমামসহ কিছু মানুষ প্রতিবছর সরকারি খরচে হজে যান। চলতি বছরও রাষ্ট্রীয় খরচে হজে যেতে জোর তদবির শুরু হয়েছিল। এরই মধ্যে ৫ হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়েছিল মন্ত্রণালয়ে। এদের মধ্যে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সচিব ও তাঁদের গানম্যান, পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, মসজিদের ইমামসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ রয়েছেন।

এমনকি রাষ্ট্রীয় খরচে পছন্দের লোক পাঠাতে কোটা দাবি করেছিলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সদস্যরাও। তাঁদের বেশির ভাগ সদস্যই নিজ সুপারিশে অন্তত দুজন করে হজে পাঠানোর সুযোগ চেয়েছিলেন। ফলে সরকারি টাকায় হজে যেতে আবেদনকারীদের নানামুখী চাপ ও তদবিরে চিড়েচ্যাপ্টা ছিলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এ প্রসঙ্গে গত ১৭ এপ্রিল ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্রীয় খরচে হজে এবার ব্যয়সংকোচনের নির্দেশনা রয়েছে। যেখানে ১০০-২০০ লোক যাওয়ার কথা, সেখানে ৫ হাজারের বেশি আবেদন পড়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিরও চাপ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা চলছে। এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধানমন্ত্রী।’