ঢাকাবুধবার, ৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মাঠ ছাড়বেন না জাহাঙ্গীরের মা

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মে ৭, ২০২৩ ৯:৫৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মাঠ ছাড়বেন না এই সিটির সাময়িক বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রচারে নামবেন তিনি। গতকাল শনিবার দুপুরে তিনি প্রথমবারের মতো নিজেদের সমর্থক ও নেতাকর্মীদের সামনে উপস্থিত হয়ে নিজের এই অবস্থানের কথা জানান। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের প্রতি অবিচার হয়েছে। আমি ছেলের স্বপ্নপূরণের জন্যই প্রার্থী হয়েছি।’ জাহাঙ্গীর আলমও মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘আইনি লড়াইয়েও প্রার্থিতা ফিরে না পেলে মায়ের জন্য মাঠে নামব। নির্বাচনী প্রচারের রোডম্যাপ তৈরির  কাজ চলছে।’ঋণখেলাপির কারণে রিটার্নিং অফিসার মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। আর জায়েদা খাতুনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন। নির্বাচনী আপিল কর্তৃপক্ষও জাহাঙ্গীরের বিষয়ে রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। এ অবস্থায় উচ্চ আদালতে আজ রবিবার রিট করবেন বলে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীর।

এদিকে এই নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে নামায় জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের দাবি উঠেছে। গত সোমবার দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এই দাবি তোলেন গাজীপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা। এই দাবির বিষয়টি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে অবহিত করবেন বলে কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে গতকাল ছেলে জাহাঙ্গীরকে সঙ্গে নিয়ে মা জায়েদা খাতুন তাঁর সমর্থক ও গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে আসেন।গতকাল দুপুরে নগরের ছয়দানা এলাকায় জাহাঙ্গীরের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, নিচতলার হলরুমে অপেক্ষা করছেন কয়েক শ নারী-পুরুষ। সিঁড়ির সামনের আঙিনাও লোকজনে ঠাসা। বাসার পূর্ব দিকের খোলা জায়গায় চলছে বিশাল প্যান্ডেল তৈরির কাজ। দুপুর ঠিক পৌনে ১টায় সিঁড়ি বেয়ে ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের হাত ধরে নিচে নামেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। এ সময় তিনি হাত নেড়ে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান এবং নিজের জন্য দোয়া চান। পরে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।

জায়েদা খাতুন বলেন, ‘একটি মহল মিথ্যা ও ভুয়া কথায় ফেলে আমার ছেলেকে ১৮ মাস ধরে স্তব্ধ করে রেখেছে। সব কিছু কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাই ছেলের স্বপ্নপূরণে প্রার্থী হয়েছি। দেখি, জনগণ আমাদের মা-ছেলেকে কেমন ভালোবাসেন। নির্বাচিত হতে পারলে রাস্তাসহ আমার ছেলের যেসব অসমাপ্ত কাজ রয়েছে সেগুলো শেষ করব।’

জনগণ তাঁর পাশে আছে জানিয়ে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘সুষ্ঠু ভোট হলে নগরের ৫৭টি ওয়ার্ডের মানুষ আমার সঙ্গে আছে, থাকবে ইনশাআল্লাহ। প্রচার শুরু হলে (প্রতীক বরাদ্দের পর) সব ওয়ার্ডেই যাব। সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখব। সব পেশার মানুষের কাছে ভোট চাইব। আমার চাওয়া-পাওয়া তাঁদের কাছে বলব। জনসেবায় আমি নতুন নই, অতীতেও মানুষের পাশে ছিলাম। ভবিষ্যতেও থাকব। আশা করি, নগরবাসী আমাকে নিরাশ করবেন না।’গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে প্রথম আলোচনায় আসেন জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। তিনি একজন গৃহিণী। অতীতে রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্তও ছিলেন না। তাঁর প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি নগরজুড়ে আলোচনার সৃষ্টি করে। স্থানীয় অনেকের ধারণা, নিজের প্রার্থিতা বাতিল হতে পারে—এই আশঙ্কা থেকে বিকল্প হিসেবে মাকে প্রার্থী করেন জাহাঙ্গীর।

আজ আদালতে যাবেন জাহাঙ্গীর :

এদিকে নির্বাচনী আপিল কর্তৃপক্ষের কাছেও প্রার্থিতা ফিরে না পাওয়ায় আজ রবিবার উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করবেন জাহাঙ্গীর আলম। গতকাল বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ‘রিট মামলা প্রস্তুত করা হয়েছে। আজ আপিল করব। আশা করি, প্রার্থিতা ফিরে পাব। পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচারের রোডম্যাপ তৈরির কাজ চলছে। প্রচার ও সমন্বয়ের জন্য প্যান্ডেল তৈরি করা হচ্ছে। আইনি লড়াইয়ে প্রার্থিতা ফিরে না পেলে মায়ের জন্য মাঠে নামব।’

জাহাঙ্গীর আলম এবং তাঁর মা জায়েদা খাতুন প্রসঙ্গে গতকাল আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আজমত উল্লাহ খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মিডিয়া ছাড়া জনগণের সঙ্গে জাহাঙ্গীরের কোনো সম্পর্ক নেই। ২০১৮ সালে নির্বাচনে দল তাঁর পেছনে ঐক্যবদ্ধ ছিল। এবার দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। তাঁকে না দেওয়ায় মা-ছেলে প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচনে নমিনেশন না দিলেই দল খারাপ। আইনগত কোনো ব্যবস্থা নিলে আইন খারাপ—এমন মানসিকতা ঠিক নয়। তার পরও তাঁর মাসহ সব প্রার্থীকে স্বাগত জানাই। জাহাঙ্গীরে বিরুদ্ধে দল কী ব্যবস্থা নেবে না নেবে, সেটা দলের নেতারা জানেন। হাইকোর্ট তাঁকে নির্বাচন করার অনুমতি দিলে আমি স্বাগত জানাব।’