ঢাকাসোমবার, ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ঈদ উপলক্ষে শহর ছাড়ছে নগরবাসী 

তানভীর মাসুদ | সিটিজি পোস্ট
এপ্রিল ১৯, ২০২৩ ৬:৩৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উৎসবকে কেন্দ্র করে নাড়ীর টানে শহর ছাড়তে শুরু করেছে বন্দর নগরীর বাসিন্দারা । মঙ্গলবার শেষ কর্ম দিবস শেষে এবং ‌ বুধবার বন্ধের দিনে শহর ছাড়তে দেখা গেছে বিপুল সংখ্যক জনসাধারণকে । নগরীর অলংকার মোড়, বহদ্দার হাট বাস স্টেশন, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, কদমতলী বাস টার্মিনাল , চট্টগ্রাম নতুন রেলওয়ে স্টেশন ও নতুন ব্রিজ এলাকায় জনসাধারণের ছিল উপচে পড়া ভিড় ।

নগরীর নতুন রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায় , পূর্বে ট্রেনে আসন না পেয়ে ছাদের উপর চড়ে বিপুলসংখ্যক মানুষ কে চট্টগ্রাম ত্যাগ করতে দেখা যেত। কিন্তু এবার নতুন টিকিট নীতিমালার কারণে ট্রেনের ছাদে চড়ে ভ্রমন করতে তেমন একটা দেখা যায় নি। চট্টগ্রাম ত্যাগ করা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা পঞ্চাশোর্ধ

আব্দুল আজিজ বলেন , “বেশ কয়েক বছর ট্রেনের টিকিট না পেয়ে ছাদে চড়ে প্রিয়জনের সাথে ঈদ করতে বাড়ি যেতে হয়েছিল আমাকে। কিন্তু এবার রেলওয়ের নতুন টিকিট নীতিমালার কারণে আমি টিকিট ক্রয় করে সিটে বসে বাড়ি যেতে পারছি । এজন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই” ।

 

 

নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায় , উত্তর চট্টগ্রামগামী বিপুল সংখ্যক মানুষ স্বজনদের সাথে ঈদ করতে বাড়ি অভিমুখে ছুটে চলছে । উত্তর চট্টগ্রামগামী প্রায় সকল যাত্রীর অভিযোগ ছিল দুই থেকে তিন গুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের বাড়িতে যেতে । বিশেষ করে সিএনজি চালকদের দাম হাঁকানো ছিল অস্বাভাবিক । নগরীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাঙ্গুনীয়ার বাসিন্দা আবু পলাশ বলেন , ” যেখানে পূর্বে স্বাভাবিক সময় রিজার্ভ সিএনজি করে বাড়ি যেতে ১৫০-২০০ টাকা গুনতে হতো সেখানে সিএনজি চালকরা দাবি করছে ৫০০ টাকা । সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এসব বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা ” ।

 

উত্তর চট্টগ্রামের মত দক্ষিণ চট্টগ্রামগামী নতুন ব্রিজ এলাকা পরিদর্শন করে অনুরূপ অভিযোগের পুনরাবৃত্তি দেখতে পাওয়া যায় । নতুন ব্রিজ এলাকায় সিএনজি চালকদের অস্বাভাবিক দাম হাঁকানো এতই দৃষ্টিকটু ছিল যে যাত্রীদের সাথে তাদের ব্যাপক বাক-বিতণ্ডার দৃশ্যও পরিলক্ষিত হয়।

 

আনোয়ারার বরকলগামী যাত্রী আবু সৈয়দ বলেন,

” আমি আমার পরিবার নিয়ে ঈদ উৎসব উদযাপন করতে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি । স্বাভাবিক সময়ে যেখানে বর কলের সিএনজি ভাড়া ছিল মাত্র ৪০০ টাকা । সেখানে সিএনজি চালকদের সিন্ডিকেটের কারণে ১২০০ টাকায় বাধ্য হয়ে আমাকে যেতে হচ্ছে । এইসব চরম অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি ” ।

 

শুধু সিএনজি নয় অনেক বাস এবং মাহিন্দ্র ও যাত্রীদের কাছে প্রায় দ্বিগুণ -তিন গুণ ভাড়া দাবী করছে । অনেক যাত্রী বাধ্য হয়ে পিকআপ করে স্বজনদের সাথে ঈদ উদযাপন করতে বাড়ির পানে ছুটতে দেখা যায় ।

 

এ সময় একটি পিকআপ এ গদাগদি করে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ জন যাত্রী চকরিয়া উদ্দেশ্যে রওনা হতে দেখা যায় । রওনা দেওয়ার প্রাক্কালে যাত্রীদের সাথে আলাপ করে জানা যায় প্রতিটি যাত্রী থেকে পিকআপ চালক ও হেলপার ৩০০ টাকা করে নিচ্ছে ” ।

 

আর মাত্র ৩ দিন পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর । প্রতিবছর এভাবে অতিরিক্ত ভাড়া গুনে ভোগান্তির শিকার হয়ে বাড়ি ফিরতে হয় নগরবাসীকে । নাড়ীর টানে সাধারণ জনগণ অতিরিক্ত ভাড়া গুনে স্বজনদের সাথে ঈদ উদযাপন ‌ করতে বাড়ির পানে ছুটে চললেও এই ভোগান্তি দূরীকরণে কোন কার্যকর ব্যবস্থা পরিলক্ষিত হয়নি অতীতের ন্যায় । যাত্রী হয়রানির এই ভোগান্তি কবে বন্ধ হবে সে প্রশ্ন ভুক্তভোগী নগরবাসীদের ।