ঢাকারবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শোরুম গুলোতে ৪০ শতাংশের বেশি ডিজিটাল পেমেন্ট হচ্ছে ঈদের কেনাকাটায়

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
এপ্রিল ১৪, ২০২৩ ৮:৪২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিভিন্ন ব্র্যান্ড, ফ্যাশন হাউস ও ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঈদ-উল-ফিতর মৌসুমে ক্রেতারা কেনাকাটার প্রায় ৪০-৫০ শতাংশ পেমেন্ট করছেন কার্ড ও মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতার (এমএফএস) মাধ্যমে।

বিক্রেতারা বলছেন, কার্ডের মাধ্যমে নির্দিষ্ট শোরুম থেকে কেনাকাটায় ১০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পাচ্ছেন গ্রাহকেরা। পাশাপাশি রমজানে বিকাশ, রকেট, নগদসহ বিভিন্ন এমএফএসের মাধ্যমে কেনাকাটাতেও মিলছে নানা ছাড়।

ক্রেতারা জানান, ঈদের মৌসুমে নগদ টাকা নিয়ে ঘোরাঘুরি করা ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে ব্যাংকের ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড থাকলে এ ঝুঁকি এড়ানো যায়। আর এখন প্রায় সব দোকানেই কার্ডে বা এমএফএসের মাধ্যমে কেনাকাটার বিল পরিশোধ করা যায়। তার সঙ্গে ক্যাশব্যাক অফারও থাকে।

ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অভ বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) নির্বাহী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম শোভন বলেন, ‘ব্র্যান্ডের পণ্য যেগুলো অনলাইনে বিক্রি হয় সেখানে ৫০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশ পেমেন্ট ডিজিটাল হয়। ক্রেতারা পণ্যের ছবি দেখে আগেই কার্ডে অথবা এমএফএসের মাধ্যমে অগ্রিম টাকা পরিশোধ করে দেন।’

কেনাকাটায় ছাড় দিচ্ছে ব্যাংক ও এমএফএস

সিটি ব্যাংকের এমেক্স ক্রেডিট কার্ড দিয়ে ৩০০টির মতো লাইফস্টাইলে ও ৫০টির বেশি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে ছাড় পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি অনলাইন কেনাকাটার পেমেন্টেও মিলছে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়।

এনআরবিসি ভিসা কার্ড দিয়ে রমজানে দেশজুড়ে ক্রেতারা যেকোনো আড়ং আউটলেটে কেনাকাটায় পাচ্ছেন ১০ শতাংশ ক্যাশব্যাক। এছাড়াও বিভিন্ন লাইফস্টাইল শপ, হোটেল স্টে, অনলাইনে কেনাকাটায় শতাধিক ই-কমার্স সাইটে দেওয়া হচ্ছে বিশেষ ছাড়।

রমজানে ব্র্যাক ব্যাংকের গ্রাহকেরা ১ হাজারের বেশি আউটলেটে পাচ্ছেন আকর্ষণীয় ছাড়। ২০৩টি লাইফস্টাইল পার্টনার শপ ও ৩৫টি গয়নার দোকানে ৩০-৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পাচ্ছেন ব্যাংকের কার্ডধারীরা। পাশাপাশি ই-কমার্স কেনাকাটায় ক্রেডিট কার্ডধারীরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক পাচ্ছেন। এ ছাড়া ৪৪টি ই-কমার্স মার্চেন্টে ২৫ শতাংশ ছাড় মিলছে।

প্রাইম ব্যাংকের ভিসা কার্ড ও মাস্টার কার্ডধারীরা লাইফস্টাইল দোকানগুলোতে কেনাকাটায় ১৫-২০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ মূল্যছাড় পাচ্ছেন। এছাড়া বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পণ্য কেনাকাটায় রয়েছে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক অফার।

ইউসিবি ব্যাংক রমজান মাসে আড়ংয়ে কেনাকাটায় ২৫ শতাংশ; অ্যাপেক্স, আর্টিসান, ইয়েলো, বাটা, টাইম জোনে ১৫ শতাংশ মূল্যছাড় পাচ্ছেন গ্রাহক।

ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের নেক্সাস-পে ও রকেট অ্যাপ দিয়ে পেমেন্ট করলে ২০ শতাংশ ইন্সট্যান্ট ক্যাশব্যাক পাওয়া যাচ্ছে।

বিকাশের গ্রাহকরা ফেসবুক শপে বিকাশ পেমেন্টে ৫ শতাংশ ক্যাশব্যাক ও অনলাইন শপে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা ইনস্ট্যান্ট ক্যাশব্যাক পাবেন। এছাড়া পছন্দের কেনাকাটায় ডিসকাউন্ট কুপনসহ পছন্দের অ্যাকসেসরিজ, জুতা ও পোশাক কিনে পাবেন ৩০০ টাকা ক্যাশব্যাক অফার।

নগদ ঈদে নির্দিষ্ট মার্চেন্টে ৫০০ টাকা বা তার বেশি পেমেন্ট করলে বিএমডব্লিউ ও টয়োটার গাড়িসহ কয়েকশ পুরস্কার জেতার সুযোগ রেখেছে। এছাড়া যেকোনো কেনাকাটার পেমেন্টে সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি নির্দিষ্টসংখ্যক গ্রোসারিতে ১ হাজার টাকা পেমেন্ট করে গ্রাহকরা ১০০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক পেতে পারেন।

বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভুটানের ভিসা কান্ট্রি ম্যানেজার সৌম্য বসু বলেন, ‘পবিত্র রমজানে এবং ঈদ উদযাপনের সময় আমরা দেখেছি ভোক্তারা মৌসুমজুড়ে কেনাকাটা করেন। তারা দৈনন্দিন ভিত্তিতে ও প্রয়োজন অনুসারে নানা ধরনের কেনাকাটা করে। তারা ক্রমেই বেশি বেশি কন্টাক্টলেস পেমেন্টেরও চেষ্টা করছেন।’

ভিসা কার্ডধারীদের নানা ধরনের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত বছরের এপ্রিলে রমজান মাস উপলক্ষে কার্ডের মাধ্যমে ৫১.৭০ লাখ লেনদেনের মাধ্যমে ২ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা খরচ করেছিলেন বিভিন্ন ব্যাংকের গ্রাহকেরা। ওই সময় পর্যন্ত লেনদেনের সংখ্যা ও পরিমাণের দিক থেকে সর্বোচ্চ অবস্থানে ছিল এপ্রিল মাস। এছাড়া ওই মাসে কার্ড ব্যবহার করে ৩৬.৬৫ লাখ লেনদেনের মাধ্যমে ১ হাজার কোটি টাকার বেশি ই-কমার্স লেনদেন করেছিলেন গ্রাহকেরা।

গত এক বছরের চিত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কার্ডের মাধ্যমে প্রায় সব ক্ষেত্রেই লেনদেন আগের তুলনায় বেড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি ঈদ উপলক্ষে কেনাকাটায় আগের সব রেকর্ড ভাঙতে পারে কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন।

সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাসরুর আরেফিন বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় কার্ডে ও মার্চেন্ট পয়েন্ট ব্যবহার করে গ্রাহকদের পেমেন্ট করার প্রবণতা অনেক বেড়েছে।

‘গত বছরের পুরো রমজান মাসে আমাদের কার্ডে ৪০১ কোটি টাকা এবং মার্চেন্ট পয়েন্টে ৬৯৫ কোটি টাকা খরচ করেছিলেন গ্রাহকেরা। চলতি বছরের ১৮ রমজান পর্যন্ত কার্ডে ৩০৫ কোটি টাকা ও মার্চেন্ট পয়েন্টে ৫১০ কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছেন তারা। আশা করছি, রমজানের বাকি দিনগুলোতেও এমন প্রবণতা অব্যাহত থাকবে।’