আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট উপলক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরামর্শক কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সারা বিশ্বে আজ অর্থনীতির মন্দা অবস্থা বিরাজমান। তার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এ দেশের বেসরকারি খাত। বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান ৪১ থেকে ৩৫তম স্থানে এসেছে।এর অংশীদার সবাই। উন্নয়নশীল দেশ ভারত, মালয়েশিয়ার কাতারে আজ আমরাও। সবাইকে নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’
মুস্তফা কামাল আরো বলেন, ‘বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নাজুক পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতির যে অর্জন সেটি অসাধারণ। এ বছর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৩.৯ শতাংশ। আগের বছর যা ছিল ৩.৫ শতাংশ এবং কভিডের আগে ছিল ৩.৮ শতাংশ। এর মাঝেও আমাদের অর্থনীতির যে অগ্রগতি সেটা অসাধারণ।’ বাংলাদেশের অগ্রগতিতে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ আজ প্রশংসা করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। তিনি শিল্প উৎপাদন ও ব্যবসা-বাণিজ্যে খরচ কমাতে আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম আয়করের (এআইটি) হার ধাপে ধাপে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন। বর্তমানে অগ্রিম আয়করের হার ৫ শতাংশ। তিনি সকল প্রকার নিত্যপ্রয়োজনীয় তালিকাভুক্ত ভোগ্য পণ্যকে উৎসে কর কর্তনের আওতাবহির্ভূত রাখার প্রস্তাব করেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি পণ্য ও সেবা খাতে মূল্য সংযোজনভিত্তিক একক ১৫ শতাংশ হারে মূসক আরোপের প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, একক ১৫ শতাংশ আরোপ করলে পণ্য ও সেবা খাত বিভিন্ন এসআরওভিত্তিক অসম করহার ও জটিলতা থেকে রেহাই পাবে। একই সাথে কর ব্যবস্থা সহজ ও সরল হবে।
পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে মূসক কমিয়ে ০.৫ শতাংশ করহার প্রস্তাব করেছে এফবিসিসিআই। ব্যবসায়ীরা বলছে, বর্তমানে ৫ শতাংশ হারে বিদ্যমান করহার ব্যবসা খরচ বহনে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া মূসকের ক্ষেত্রে উপজেলা পর্যন্ত ভ্যাট অফিসের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করে ভ্যাটের নেটের আওতা বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। করদাতাদের ব্যবসা পরিচালনা ও মূসক কর্তৃপক্ষের তদারকি সহজ করতে ভ্যাট নিবন্ধন, রিটার্ন দাখিল, রিফান্ড, অডিট সহ সকল কার্যক্রমের ক্ষেত্রে অটোমেশন নিশ্চিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার করপোরেট করহার আড়াই শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করেন।
বিজিএমইএ সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম এইচ এস কোড সংক্রান্ত জটিলতায় তৈরি পোশাক শিল্পের প্রধান কাঁচামাল কাপড় বা সুতা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সকল উপকরণ অঙ্গীকারনামা গ্রহণ সাপেক্ষে ছাড়করণ করার প্রস্তাব করেন।
বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন ম্যানমেইড ফাইবারের উপর আরোপিত সকল ধরনের শুল্ক কর প্রত্যাহারের সুপারিশ করেন। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ সিইটিপি ও ইটিপির যন্ত্রপাতির ওপর থেকে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেন।