ঢাকারবিবার, ২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

র‍্যাব হেফাজতে নারীর মৃত্যু

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
মার্চ ২৭, ২০২৩ ১০:৪১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

র‍্যাব-৫-এর হেফাজতে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান নওগাঁর ভূমি কার্যালয়ের অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিন (৪৫)। ঘটনার পর থেকেই সংস্থাটি দাবি করছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে আটক করা হয়, কিন্তু কী সেই অভিযোগ? কেনই-বা পুলিশের কাছে না গিয়ে বাদী সরাসরি র‍্যাবের কাছেই অভিযোগ দিলেন—এমন নানা প্রশ্নের জবাব মিলছে না। এমনকি ঘটনার পর থেকে মামলার বাদীরও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৪ মার্চ সকাল ১০টায় জেসমিন মারা যাওয়ার আগের দিন বিকেল ৫টা ১০-এ নগরীর রাজপাড়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়। রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. এনামুল হকের করা মামলার এজাহার বিশ্লেষণ করে বেশ কিছু বিষয় সামনে এসেছে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, এনামুল হক ২০ মার্চ তাঁর অফিসের উচ্চমান সহকারী জামালের মাধ্যমে জানতে পারেন কে বা কারা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাঁর পরিচয় ও পদবি ব্যবহার করে ফেসবুক আইডি খুলে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আগের দিন অর্থাৎ ১৯ মার্চ বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা টাকা নিয়েছে বলেও জানতে পারেন তিনি।

এনামুল হক নিজে তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে জানতে পারেন চাঁদপুরের হাইমচরের মো. আল আমিন (৩২), সুলতানা জেসমিনসহ (৪০) অজ্ঞাত আরও দু-তিনজন এ কাজে জড়িত। এরপর ২২ মার্চ তিনি দাপ্তরিক কাজে নওগাঁর উদ্দেশে রওনা দেন। রাস্তায় নওগাঁ বাসস্ট্যান্ডে র‍্যাবের একটি টহল দলকে দেখতে পান তিনি। দায়িত্বে থাকা ডিএডি মাসুদকে নিজের অভিযোগ জানান। সেই দল এমন অপরাধ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারার মধ্যে পড়ে বলে তাঁকে জানায়। তাৎক্ষণিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ওই টহল টিম অবস্থান নির্ণয় করে মুক্তির মোড় থেকে সুলতানা জেসমিনকে আটক করে বেলা সোয়া ১১টার দিকে।

মামলায় এনামুল দাবি করেন, আটকের পর জেসমিন তাঁর নামে ফেসবুক আইডি খুলে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেন। তাঁর সোনালী ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে লেনদেনের বিষয়টি জানা যায়।

প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই কার্যক্রমের একপর্যায়ে মামলার ১ নম্বর আসামি ও অজ্ঞাত আরও দু-তিনজনের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় জেসমিন অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন এনামুল। এরপর তাঁকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে অবস্থার অবনতির কারণে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন চিকিৎসকেরা।

এনামুল আরও জানান, জেসমিনের বোনের জামাই আমিনুলের তত্ত্বাবধানে র‍্যাবের পাহারায় তাঁকে রাজশাহীতে পাঠানো হয়। এরপর তিনি তাঁর শারীরিক অবস্থান পর্যবেক্ষণ এবং আত্মীয়স্বজনকে ঘটনা জানানোর কারণে মামলা করতে দেরি হয়।

বিষয়টি নিয়ে আরও জানতে যুগ্ম সচিব এনামুল হকের সঙ্গে কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারেনি আজকের পত্রিকা। তাঁর সরকারি এবং ব্যক্তিগত দুই মোবাইল ফোনেও বারবার চেষ্টা করা হয়েছে। কার্যালয় থেকেও কোনো তথ্য জানা যায়নি।

তবে র‍্যাব সদর দপ্তরের একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করে তারা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ২৯ লাখ টাকা লেনদেনের প্রমাণের দাবিও করে সংস্থাটি। জেসমিনকে ক্যাম্পে নেওয়া হয়নি, তাঁর আগেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে আত্মীয়ের সান্নিধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানান পরিচালক পর্যায়ের এক কর্মকর্তা।