রোজা আসার আগেই মুরগিসহ গরু-খাসির মাংসের দাম বেড়ে গেছে। বেড়েছে দুধ-চিনিসহ আরো কিছু নিত্যপণ্যের দাম, রমজান মাসে ঘরে ঘরে যেসবের চাহিদা বেড়ে যায়। বর্তমান এই বাজার পরিস্থিতি আসন্ন রমজানে ক্রেতা বা ভোক্তা সাধারণের জন্য দুর্ভোগের আভাস দিচ্ছে।
সম্প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, রোজার মধ্যে বাজারে কেউ হুমড়ি খেয়ে না পড়লে নতুন করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে না। দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য মাসজুড়ে র্যাব, পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা বাজার পর্যবেক্ষণ করবেন।
রাজধানীর গুলশান-১, বাড্ডা, তেজগাঁও এলাকার মুদি দোকানে গিয়ে দেখা গেছে, আড়ং ও মিল্ক ভিটা কম্পানির দুধ বাড়তি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়া বাজারগুলোতে মাংস, পানি বিক্রি হচ্ছে বেশি দামে।
রাজধানীর শেরেবাংলানগর থানার শুক্রাবাদ কাঁচাবাজারে মাংস বিক্রেতা আলী হোসাইন কোরাইশি বলেন, ‘সবাই গরুর মাংস ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছে; কিন্তু আমরা বিক্রি করছি ৭৫০ টাকা করে। গরুর দাম বেড়েছে। আগে ৪০ কেজির এক বস্তা ভুসির দাম ছিল ৮৫০ টাকা, এখন সেটা এক হাজার ৪০০ টাকা বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ২০০ টাকা।’
তিনি বলেন, ‘আমার এই বয়সে এই প্রথম এত দামের কথা শুনতেছি। গরু পালতে খরচ বেশি হচ্ছে, তো সে কি বেশি দামে বিক্রি করবে না? খামারির তো মাসে অন্তত পাঁচ হাজার টাকা লাভ থাকতে হবে।’
কাঁঠালবাগান কাঁচাবাজার এলাকায় খাসির মাংস বিক্রেতা নুরে আলম বলেন, ‘গত ডিসেম্বরের পর থেকে এক হাজার ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। এ সময় খাসির দাম কমার কথা ছিল; কিন্তু কমছে না।’
রোজায় দুধ ও মাংসের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে শ্যামলীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, ‘রোজায় দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকায় শরীরে মেটাবলিজমের একটা পরিবর্তন আসে। ইফতারে ভাজাপোড়া খাবার না খেয়ে স্যুপজাতীয় খাবার খেতে হয়। এর এক ঘণ্টা পর প্রোটিনজাতীয় খাবার খাওয়া উচিত, যাতে শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকে। এ জন্য সবারই খাবারের তালিকায় দুধ-মাংস থাকা দরকার। তবে লালের চেয়ে সাদা মাংস খেলে ভালো।
খুচরা ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, সরকার নির্ধারিত খোলা চিনির দাম ১০৭ টাকা কেজি হলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে। প্যাকেটজাত চিনি পাওয়া দুর্লভ। দু-একটি দোকানে হঠাৎ পাওয়া গেলেও দাম বেশি। পানি গত এক মাসের ব্যবধানে আধালিটারে পাঁচ টাকা বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হয়েছে। একইভাবে এক লিটার, দুই লিটার ও পাঁচ লিটারের পানির বোতলেও পাঁচ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে। পোলাওয়ের চাল কিছু দিন আগে ছিল ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি দরে।