আজ পবিত্র শব-ই-বরাত বা লাইলাতুল বরাত। শাবান মাসের ১৪ তারিখের দিবাগত রাতকে শবে বরাতের রাত্রী বলে ঘোষণা করা হয়। শব শব্দটি ফার্সি যার অর্থ রাত আর বরাত শব্দের অর্থ ভাগ্য।
বিশেষ এ রাতে মহান আল্লাহ তায়ালা আগামী এক বছরের জন্য মানুষের রিজিক, জন্ম-মৃত্যু ইত্যাদি বিষয় নির্ধারণসহ তার সৃষ্ট জীবের ওপর অসীম রহমত নাজিল করে থাকেন বলে এ রাতকে শবেবরাত বা ভাগ্যরজনী বলা হয়।
আজ দিনের সূর্য অস্ত গেলেই চরাচর ঘিরে নিবে এক ধর্মীয় উৎসবের আবহ। মসজিদগুলো ভরে উঠবে। ইমাম সাহেবরা বয়ান করবেন। মুসল্লিরা নামাজ আদায় করবেন। আত্মীয়-স্বজনরা পরস্পরের বাসা-বাড়িতে ঘুরবেন। পাড়ায় পাড়ায় আনন্দধারা বইবে। অনেকে যাবেন গোরস্থানে মৃত স্বজনদের জন্য দোয়া করতে। আলোক সজ্জায় উদ্ভাসিত করা হবে মসজিদ, পীরের মাজার, খানকাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান।
আরব বিশ্বে, সুফি ঐতিহ্যের আরবেরা ও শিয়ারা এই উৎসব পালন করে। ইরানে বারো ইমাম শিয়ারা শিয়া মতবাদের দ্বাদশ ইমাম মাহদির জন্মদিন হিসেবে এই দিনটি পালন করে। এই রাতে ইরানের সর্বত্র আলোক সাজসজ্জা করা হয়, দোয়া-মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
কিন্তু বাঙালি মুসলিমদের কাছে শবে বরাত যেন আরেকটি ধর্মীয় উৎসব।তারা অনেক রকম মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন সুজি এবং বুটের হালুয়া থেকে গরুর মাংস চালের রুটি তৈরী করেন।পাড়া-প্রতিবেশী,আত্মীয়-স্বজন সকলের বাড়ি বাড়ি এসব খাবার নিয়ে যাওয়া আবার খালি টিফিন ক্যারিয়ার ভর্তি করে খাবার নিয়ে আসা,পাড়ার সকল বাচ্চারা একত্রিত হয়ে তারাবাতি-আতশবাজি ফাটানো,ছেলেরা সারা রাত বন্ধু দের সাথে নামাজ পড়ে মেয়েরা ঘরে সকলের একত্রে নামাজ পড়ে।মুলত এটি একটি উৎসব বাঙালী মুসলমানদের কাছে।
কিন্তু দিন দিন যেন তা হারিয়ে যাচ্ছে। সেই সাবলীল শবে বরাত যেন আর নেই। এখন কেউ কারো খোঁজ রাখে না।বাচ্চাদের সেই উল্লাস কিংবা বড়দের সেই আনন্দ কোনোটিই এখন যেন আর দেখা যায় না।