দাড়ি-টুপির প্রসঙ্গ তুলে হেফাজতে ইসলামের ক্ষমা চাওয়ার দাবি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেছেন, ‘আমি কখনোই দাড়ি-টুপির বিরুদ্ধে বলিনি। আমার বাবারও দাড়ি ছিল, টুপি পরতেন। আমিও মাঝেমধ্যে টুপি পরে থাকি। তারা (হেফাজত) এটাকে ইস্যু করে আমাদের শিক্ষা-সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে চায়। অবশ্য হেফাজত যখন আমার বিরুদ্ধে যায়, তখন বুঝি আমি বেহেস্তের পথে আরো এক ধাপ অগ্রসর হলাম।’
আজ বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা কর্মসূচিতে কৃষি প্রশ্ন ও বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনাসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল) আয়োজিত এক আলোচনাসভায় রাশেদ খান মেনন বলেন, যারা রাজাকার-আলবদরদের টুপির নিচে নিয়ে গণতন্ত্রের লড়াই করে, তারা আমাদের বন্ধু হতে পারে না, বরং শত্রু। তাদের সর্বক্ষেত্রে বর্জন করতে হবে। ওই বক্তব্যবের নিন্দা জানায় হেফাজতে ইসলাম। দলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে রাশেদ খান মেননকে বক্তব্য প্রত্যাহার ও ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়।
আলোচনাসভায় শিক্ষা ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িকীকরণের অভিযোগ উত্থাপন করেন সাবেক মন্ত্রী মেনন। তিনি বলেন, তরুণরা এগিয়ে না এলে বাংলাদেশের অবস্থা আফগানিস্তানের চেয়েও খারাপ হবে। আফগানিস্তানের নারীরা এখন স্কুলে যেতে পারছে না। অথচ খোদ সৌদি আরবে নারীরা এখন গাড়ি চালাচ্ছে, খেলাধুলা করছে। ইরানে হিজাবের বিরুদ্ধে লড়াই চলছে। তাই অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে এবং লড়াই জোরদার করতে হবে।
রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘স্বাধীনতার প্রশ্নে কৃষক শ্রমিকের অংশগ্রহণ এবং এতে তাদের জীবনমানের কী পরিবর্তন এসেছে, তা আমাদের মনে রাখতে হবে। ১৯৭০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পল্টন ময়দানে স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা ঘোষণা দিবসের কর্মসূচিতে কৃষকের প্রশ্নে, কৃষির প্রশ্নে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়। কিন্তু আজ স্বাধীনতার ইতিহাস একমুখী এককেন্দ্রিক হয়ে গেছে। কিন্তু এমন একদিন আসবে, যেদিন সত্য ইতিহাস আবারও উদঘাটিত হবে।’