আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে আপাতত তিনটি বিকল্প নিয়ে প্রস্তুতিমূলক কাজ করছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। বিএনপিসহ নির্বাচন অথবা বিএনপি ছাড়া নির্বাচন—এই দুই বাস্তবতা মাথায় রেখেই বিকল্পগুলো ভাবা হয়েছে বলে জানান দলের কয়েকজন নীতিনির্ধারক।
দলীয় সূত্র জানায়, যা কিছুই করা হোক আওয়ামী লীগের প্রধান লক্ষ্য থাকবে এবারের নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দেখিয়ে বা রেখে জয়লাভ করা। মূলত তা নিশ্চিত করতেই একাধিক বিকল্প নিয়ে কাজে হাত দিয়েছে দলটি। কারণ এবার সব মহল থেকেই অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের চাপ আছে।
তৃতীয়ত, বিএনপিসহ একাধিক দল যদি একেবারে শেষ মুহূর্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ায়, সে ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তুতি রাখা হবে। প্রতিটি আসনে এখন থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী ঠিক করে রাখার নির্দেশনাও দিয়ে রেখেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি এমনকি বিএনপির সাবেক এমপিদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
এসব তৎপরতার অন্যতম লক্ষ্য হলো—বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার প্রবণতা আটকানো। বিএনপি নির্বাচনে না এলে ৩০০ আসনের কোথাও যেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ নির্বাচিত হতে না পারেন সে লক্ষ্যে একাধিক বিকল্প নিয়ে এখনই কাজ শুরু করা হয়েছে।
মিত্র দলগুলোর সর্বোচ্চ প্রার্থী : বিএনপি আগামী নির্বাচনে না এলে ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল, জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ অন্য মিত্র দলগুলোকে সর্বোচ্চসংখ্যক আসনে প্রার্থী দেওয়ার জন্য বলবে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একটি সূত্র জানায়, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন ভাগাভাগির সম্ভাবনা বেশি। কয়েকটি আসন ছেড়ে দেওয়া হবে ১৪ দলের শরিকদের জন্য। যে আসনগুলো ছেড়ে দেওয়া হবে সেগুলোতে আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীকের কোনো প্রার্থী দেবে না। তবে আওয়ামী লীগের যেসব আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখা যাবে সেখানে প্রার্থী দিতে বলা হবে মিত্র দলগুলোকে।
দলের আরেকটি সূত্রের মতে, বিএনপি নির্বাচনে না এলে জাতীয় পার্টি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি-জেপি, তরীকত ফেডারেশন মিলে দেশের ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে পারে।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন পেয়েছে বিএনপির সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হুদার দল তৃণমূল বিএনপি। এই দলের পক্ষ থেকেও দেশের বিভিন্ন আসনে প্রার্থী দেওয়া হতে পারে।
ইসলামী দলগুলোকে পক্ষে রাখার চেষ্টা : আগামী নির্বাচনে ইসলামী দলগুলোকেও প্রার্থী দেওয়ার জন্য উৎসাহ দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা এবং সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ১৪ দলের শরিক তরীকত ফেডারেশনও এ লক্ষ্যে একাধিক ইসলামী দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছে।