ঢাকাশনিবার, ২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৩ লাখ টাকার ডিজেল গুপ্তখাল মহেশখাল ছাড়িয়ে কর্ণফুলীতে

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩ ১০:০৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

লাইনচ্যুত ওয়াগন উদ্ধারের পর একটি থেকে ২০ হাজার লিটার ডিজেল উদ্ধার করা গেছে। তবে খালের জলে ভেসে গেছে ওই ওয়াগনে থাকা আরও ১০ হাজার লিটার ডিজেল। যার আনুমানিক মূল্য ১৩ লাখ টাকার মতো।

এছাড়া লাইনচ্যুত আরেকটি ওয়াগন থেকে কি পরিমাণ তেল নিঃস্বরিত হয়েছে তা সম্পর্কে জানাতে পারেনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম রেলওয়ের গুডস পোর্ট ইয়ার্ডে (সিজিপিওয়াই) একটি তেলবাহী ট্রেনের দুইটি ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে যায়। এতে ওয়াগনে থাকা ডিজেল ইয়ার্ডের ড্রেনে পড়ে পাশে গুপ্ত খালের উপ-শাখায় ছড়িয়ে পড়ে। খালটি মিশেছে কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে। ফলে নদীতে তেল ছড়িয়ে পড়ছে বলে আশঙ্কা করছে পরিবেশ অধিদপ্তর।

জানা গেছে, তেলবাহী ট্রেনের ওয়াগন ইয়ার্ডে প্রবেশ করার মুহূর্তে ৫ নাম্বার লাইনে ১৬টি ওয়াগনের মধ্যে তিনটি ওয়াগন লাইচ্যুত হয়। ঘটনার সারা রাত তেল পড়তে থাকলে রাত ১টায় লাকসাম থেকে উদ্ধারকারী হাইড্রলিক রিলিফ ক্রেন ইয়ার্ডে আনা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় প্রথম ওয়াগন উদ্ধার হয়, বাকি দুটি সকাল ১১টায় আরেকটি ওয়াগন উদ্ধার করা হয়। সবশেষ বিকাল ৫টার দিকে আরও একটি ওয়াগন উদ্ধার করা হয়। যেখানে ২০ হাজার লিটার ডিজেল পাওয়া গেছে।

এদিকে ঘটনা তদন্তে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা তারেক বিন ইমরানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আমরা দ্রুত দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দেব। তবে লাইনচ্যুত ওয়াগানের তেল নদীতে যায়নি বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, টিভি চ্যানেলগুলোতে যেভাবে তেল পড়ার দৃশ্য দেখানো হচ্ছে– আসলে সেইভাবে তেল পড়েনি। দুর্ঘটনার পরপর তেল পড়লেও সাথে সাথে বন্ধ করা হয়েছে। তবে কী পরিমাণে তেল পড়েছে এবং কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা তিনি জানাতে পারেননি। তিনি জানান, লাইনচ্যুত তিনটি ওয়াগনের মধ্যে দুটি গত বুধবার রাতে উদ্ধার করা হয়েছে। একটি ওয়াগন আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে উদ্ধার করার পর লাইন সচল হয়েছে। তবে ওয়াগনগুলো উদ্ধার করার জন্য লাইন বন্ধ ছিল না। এখানে একাধিক লাইন রয়েছে। অন্যান্য লাইন দিয়ে ইয়ার্ড থেকে মালামাল পরিবহন সচল ছিল।

পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মনির হোসেন জানান, রেলওয়ের সিজিপিওয়াই ইয়ার্ডে লাইনচ্যুত হওয়া তেলবাহী ওয়াগন থেকে ছিটকে পড়া তেল সিজিপিওয়াই খাল, গুপ্তা খাল ও মহেশ খাল দিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। মহেশখাল যেখানে কর্ণফুলী নদীতে মিশেছে, সেখানকার স্লুইচ গেটটি বুধবার থেকে বন্ধ ছিল। আমরা গেটের ভেতরের দিকে খাল থেকে নমুনা নিয়েছি একাধিক। খালের পানিতে ভালো পরিমাণে তেলের উপস্থিতি আছে। গেটের অপর পাশে নদীর পানির নমুনাও নিয়েছি। নমুনা পরীক্ষার পর বলা যাবে তেল নদীতে ছড়িয়েছে কি না। তবে খালি চোখে নদীর পানিতে খুব অল্প পরিমাণ তেল দেখা গেছে।

এদিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওয়াগন থেকে পড়া তেলের কারণে খালের পানি রং পাল্টে গেছে। রাতে ট্রেনের থেকে স্থানীয় এলাকাবাসী ডিপো সংলগ্ন ব্রিজের নিচে তেল কুড়াতে ভিঢ় করে।

এসহাক ডিপোর কর্মরত ট্রলি হেলপার শরিফ উদ্দিন বলেন, গত রাতে আমি ১৫ লিটার তেল পেয়েছি। তখন তেল খালের মুখে ছিল। কিন্তু সকাল থেকে ছড়িয়ে পড়েছে।

১০৯ লিটার তেল পেয়েছেন স্থানীয় মোহাম্মদ সিদ্দিক।  তিনি বলেন, সকাল থেকে দুই ছেলেকে নিয়ে ১০৯ লিটার তেল সংগ্রহ করেছি। বিক্রি করেছি লিটার প্রতি ৬০ টাকা দরে।