স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা ৩৭ হাজার এদিকে, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৭১৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তুরস্কে এখন পর্যযন্ত ৩১ হাজার ৬৪৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দেশিটির দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় জানায়, এবারের ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ১৯৩৯ সালের ভূমিকম্পকেও ছাড়িয়ে গেছে। আধুনিক তুরস্কের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্প।
৬ ফেব্রুয়ারির তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সৃষ্ট ৭ দশমিক ৮ ও ৭ দশমিক ৬ মাত্রার দুটি ভূমিকম্প চলতি শতাব্দীর ষষ্ঠ প্রাণঘাতী প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়ে উঠছে। এর আগে আছে ২০০৫ সালে পাকিস্তানে হওয়া ভূমিকম্পে প্রায় ৭৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল।
এদিকে, ভূমিকম্পের এক সপ্তাহ পরও তুরস্কের ধসে পড়া ভবনগুলোর নিচ থেকে বেশ কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন খাবার-পানি ও বাতাস ছাড়া আটকে থাকায় কাউকে জীবিত উদ্ধারের আশা একেবারেই কমে গেছে বলে দাবি উদ্ধারকারীদের।
তবে ভূমিকম্প আঘাত হানার ১৮২ ঘণ্টা পর সোমবার (১৩ জানুয়ারি) তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ হাতাইয়ে ধসে পড়া এক ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরকে উদ্ধার করা হয়। একই দিনে আদিয়ামান শহরের ধ্বংসস্তূপ থেকে মিরায় নামের ছয় বছর বয়সী এক বালিকাকে উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, এরদোয়ান সরকারের বিরুদ্ধে উদ্ধারকাজে ধীরগতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলেছেন বেঁচে যাওয়া মানুষেরা। ক্রমেরই বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনার মাত্রা বাড়ছে।
জানা যায়, পর্যযাপ্ত সরঞ্জামের অভাবের পাশাপাশি, প্রচন্ড ঠান্ডা আবহাওয়া উদ্ধার অভিযানের গতি কমিয়ে দিচ্ছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের উদ্ধার অভিযানের পরিসর গুটিয়ে আনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পোল্যান্ডের কয়েকজন উদ্ধারকারী জানান, বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) তারা তুরস্ক ছেড়ে যাবেন।
এর আগে জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথ জানিয়েছিলেন, উদ্ধার অভিযান প্রায় শেষের দিকে। এখন আশ্রয় ও খাবারের ব্যবস্থা করাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো চালু করার দিকে মন দিতে হচ্ছে।
এদিকে সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে কূটনীতিকরা জানান, তুরস্ক থেকে জাতিসংঘের ত্রাণ সিরিয়ায় প্রবেশের অনুমতি দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ।