দেশ ও দেশের জনগণকে বাঁচাতে সবাইকে রাজপথে নামার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। আজ শনিবার যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কোণ্ডা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম-পাড়া-মহল্লায় পদযাত্রা কর্মসূচি শেষে আলুকান্দা স্যান্ড বাজারে সংক্ষিপ্ত পথসভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
বিএনপির ঢাকা জেলার সাধারণ সম্পাদক ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার সভাপতি অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীর পরিচালনায় এতে আরো বক্তব্য দেন জাসাসের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যসচিব জাকির হোসেন রোকন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আজ দেশের ৪৫০০ ইউনিয়নে পদযাত্রা কর্মসূচি হচ্ছে। দাবি এক, আমরা একটা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন চাই। আমরা আমাদের ভোটের অধিকার চাই। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। আমার ভোট আমি দেব, কেন্দ্রে গিয়ে দেব এবং রাতে নয়, দিনে দেব। এটা হচ্ছে আমাদের মূল দাবি।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই দাবির সাথে প্রাসঙ্গিক আমাদের ১০ দফা দাবি। শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু ও অবাধ একটা নির্বাচন হতে পারে না। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হলে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে, কারণ তিনি ভোটে নির্বাচিত না। পুলিশ কর্তৃক রাতের বেলায় ভোট হয়েছে। আপনারা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, মেম্বার, উপজেলা এবং সংসদ নির্বাচনের কোথাও ভোট দিতে পারেন না।’
বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলের চলমান আন্দোলনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা কেন মাঝপথে রাজপথে নেমেছি। এর একটি কারণ আছে। এখানে যারা দোকান করেন, ব্যবসা করেন এবং যারা ক্রয় করেন। প্রত্যেকটা জিনিসের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে না? কিন্তু আপনাদের আয় কি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে? এ সময় সবাই বলে ওঠেন-না। যদি জিনিসপত্রের দাম বাড়ে, আর আয় যদি না বাড়ে তাহলে চলবেন কিভাবে? বিদ্যুতের দাম বাড়ছে, গ্যাসের দাম বাড়ছে। সারা পৃথিবীতে জ্বালানি তেলের দাম কমছে, কিন্তু আমাদের দেশে বিদ্যুতের দাম লাগামহীনভাবে বাড়াচ্ছে। গ্যাস-বিদ্যুতের দাম যদি বাড়ে, তাহলে সব জিনিসপত্রের দাম বাড়বে-এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ আছে? সবাই বলে উঠেন না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমদানিকারক, যারা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমদানি করে, তারা এলসি খুলতে পারছে না, আমদানি করতে পারছে না। সরকার টাকা দিতে পারছে না, কারণ তাদের হাতে ডলার নেই। আপনারা জানেন, সামনে রোজা উপলক্ষে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী নিয়ে পাঁচটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে আছে। কিন্তু একটিও খালাস করতে পারছে না। কারণ সরবরাহকারীদের টাকা পরিশোধ করতে পারছে না। একটি জাহাজে ১৬ হাজার ডলার করে পাঁচটি জাহাজের জন্য ৮০ হাজার ডলার করে ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে। টাকা দিয়ে যখন মাল খালাস করবেন, তখনই জিনিসের দাম বাড়বে না? সেই দামে কী এসব পণ্য কিনে খেতে পারবেন? সবাই বলে ওঠেন না। সুতরাং দৈনন্দিন জীবনে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি, আয় বাড়ছে না, কর্মক্ষেত্র নেই। এই অবস্থায় এই মানুষগুলো বাঁচবে কী করে? এ জন্য দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচানোর তাগিদ থেকে আজ আমরা এই পদযাত্রা কর্মসূচি করে করে ঘরে ঘরে আপনাদের কাছে যাচ্ছি। আপনাদের দুঃখ-কষ্টের সঙ্গে আমরা একাত্মতা ঘোষণা করছি। আপনারা মাঠে নামুন। এই সরকারকে গদি থেকে নামতে হবে।’
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর উদ্দেশে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আপনি যখন গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম কমাতে পারেন না, তাহলে পদত্যাগ করে জনগণের কাতারে আসুন। গ্যাস ও বিদ্যুতের কথা বললে মন্ত্রী সাহেব মনে করেন, তার বিরুদ্ধে বলছি, না তোমার বিরুদ্ধে বলছি না। এসব বাড়ানো-কমানোর ক্ষমতা মন্ত্রীর নেই বলে মন্তব্য করেন গয়েশ্বর।