প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সত্য ও সুন্দরের অভিসারী বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হল মাঠে সরস্বতী পূজামণ্ডব পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা সেই সত্য, সুন্দরের অভিসারী। তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন ভিশন ২০২১ থেকে রূপকল্প ২০৪১ এর দিকে। যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ। আসুন আমরা এই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে কুশিলব কারিগর হয়ে যার যার সম্বল থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করি, তার হাতকে শক্তিশালী করি। অসুরের বিরুদ্ধে সুরের ঝঙ্কার তুলি, অশান্তির বিরুদ্ধে শান্তির পতাকা উড্ডয়ন করি। শান্তির পায়রা উড়িয়ে আমরা বাংলাদেশকে একটা শান্তিময় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার রূপান্তর ঘটাই।’
শান্তিপূর্ণ ঢাবি ক্যাম্পাস প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, এই ক্যাম্পাসকে শান্তিময় ক্যাম্পাসে রূপ দিতে হবে। এখানে সাম্প্রদায়িকতার আগ্রাসন আমরা চাই না, জঙ্গিবাদের আগ্রাসন আমরা চাই না। অস্ত্রের ঝনঝনানি এক সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে অস্থিতিশীল করেছিল। এখানে এখন আর অস্ত্রের ঝনঝনানি নেই। সেই ক্যাম্পাস এখন শান্তিপূর্ণ। এ দেশের রাজনীতিতে আমরা সেতু বন্ধন রচনা করব।
জগন্নাথ হলের স্মৃতিচারণ করে কাদের বলেন, এই জগন্নাথ হল আমার জীবনের এক স্মৃতিময় অধ্যায় হয়ে রয়েছে। ’৭৫ এর পর বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমাদের সব কর্মকাণ্ড এই জগন্নাথ হল থেকে পরিচালিত হয়েছে। আমরা এক ঝাঁক তরুণ সে দিন প্রতিবাদে শামিল হয়েছিলাম। এই জগন্নাথ হল থেকে প্রস্তুতি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছিলাম। এরপর বটতলা থেকে ৪ নভেম্বর আমরা গণমিছিল, শোক শোভাযাত্রা করেছিলাম যার গন্তব্য ছিল বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাসভবন। ’৭৫ এর পর জিয়াউর রহমানের কারাগারে আড়াই বছর জেল খেটেছিলাম। ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করেছিল।
ছাত্রলীগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার ধমনীতে ছাত্রলীগের রক্ত প্রবাহিত; আমার চেতনায়, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের চেতনায় প্রবাহিত। আমি ছাত্রলীগের গৌরবময় ইতিহাসের উত্তরাধিকারী। শেখ হাসিনা সরকারের ১৬ বছর মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছি। কাজেই ছাত্রলীগ করলে কেউ হারিয়ে যায় না। কমিটমেন্ট থাকলে; লেগে থাকলে, জীবনে অনেক অসাধ্য সাধন করা যায়। অনেক কৃতিত্ব অর্জন করা যায়।
বিদ্যার দেবী স্বরস্বতীকে সম্মান জানিয়ে তিনি বলেন, আজকের এই দিনে বিদ্যার দেবীকে স্যালুট জানাই। আমাদের সবার অভিন্ন শত্রু সাম্প্রদায়িকতা। সনাতন ধর্মাবলম্বী সবাইকে আমি বলব, আমাদের প্রধানতম এনিমি সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ। সাম্প্রদায়িকতা রুখতে হবে, জঙ্গিবাদ রুখতে হবে।
আলোচনা সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিহির লাল সাহা। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত কুমার নন্দী, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ।