নিয়তি মানুষকে অকল্পনীয় ঘটনার সাক্ষী করে? ১৭ বছর আগে এমনই এক বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন তার স্বামী। তিনিও ছিলেন বিমানের কো পাইলট। ঘটনাচক্রে সেটিও ছিল এই ইয়েতি এয়ারলাইন্সেরই একটি বিমান।
এত বছর পরে একইভাবে প্রাণ হারালেন অঞ্জু খাতিওয়াড়া। রোববার নেপালে ভেঙে পড়া ইয়েতি এয়ারলাইন্সের এটিআর বিমানের কো পাইলট ছিলেন অঞ্জু। স্বামীর মতোই একই ভাবে প্রাণ গেল তার। স্বপ্নপূরণের মাত্র কয়েক সেকেন্ড আগেই থেমে গেল অঞ্জুর যাত্রা। কারণ এই বিমানটি সফলভাবে অবতরণ করাতে পারলেই কো পাইলট থেকে ক্য়াপ্টেন হিসেবে উন্নীত হতেন অঞ্জু। যা ছিল তার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন।
রোববার নেপালের পোখরায় ভেঙে পড়া ইয়েতি এয়ারলাইন্সের এটিআর ৭২ বিমানটির পাইলট ছিলেন কমল কে সি। অঞ্জু ছিলেন কো পাইলট। কো পাইলট হিসেবে এটিই ছিল তার শেষ ফ্লাইট। কমল কে সি অঞ্জুর প্রশিক্ষকও ছিলেন।
ঘটনাচক্রে ১৬ বছর আগে ২০০৬ সালের ২১ জুন নেপালেই একটি বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্য়ু হয়েছিল অঞ্জুর স্বামী দীপক পোখরেলের। তিনিও ছিলেন ইয়েতি এয়ারলাইন্সের সেই বিমানের কো পাইলট। সেই দুর্ঘটনায় মৃত্য়ু হয় ৬ জন যাত্রী এবং ৪ জন বিমানকর্মীর।
রোববার সফলভাবে বিমান নিয়ে অবতরণ করতে পারলেই স্বপ্নপূরণ হত অঞ্জুর। স্বামীর মৃত্য়ুর পরেও যে স্বপ্নের পথ থেকে সরে আসেননি তিনি। এর আগে সবক্ষেত্রেই কো পাইলট হিসেবে সফলভাবে নেপালের বিভিন্ন বিমানবন্দরে অবতরণ করেছেন অঞ্জু। কিন্তু স্বপ্নপূরণের শেষ ধাপেই তার নিয়তিতে হয়তো অন্য় কিছু লেখা ছিল।
কো পাইলট থেকে পাইলট বা ক্য়াপ্টেন পদে উন্নীত হওয়ার জন্য় অন্তত ১০০ ঘণ্টা বিমান ওড়ানোর অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন। রোববার পোখরার নতুন বিমানবন্দরে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের এই বিমান নিয়ে অবতরণ করতে পারলেই সেই মাপকাঠি পেরিয়ে যেতেন অঞ্জু। বিমান অবতরণের জন্য় খুব বেশি হলে আর দশ সেকেন্ড সময় লাগত। কিন্তু মুহূর্তের মধ্য়ে তালগোল পাকিয়ে গেল সবকিছু। অভিশপ্ত বিমানের আগুনেই পুড়ে ছাই হয়ে গেল অঞ্জুর স্বপ্ন।