ঢাকাশুক্রবার, ২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জামিন পেলেন সেই মুস্তাকিম

নিজস্ব প্রতিবেদক | সিটিজি পোস্ট
জানুয়ারি ১৫, ২০২৩ ৫:২৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিসের ফি কমানোর দাবিতে সড়ক অবরোধে পুলিশের সঙ্গে হামলায় জড়িয়ে গ্রেপ্তার হওয়া সেই মোস্তাকিমের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রবিবার (১৫ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-২ মো. অলি উল্লাহর আদালত জামিনের আদেশ দেন।

 

মোস্তাকিমের পক্ষে জামিন শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শুভাশীষ শর্মা।

 

গত ১০ জানুয়ারি চমেক হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিসের ফি কমানোর দাবিতে সড়ক অবরোধকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে রোগী ও তাদের স্বজনদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে মোস্তাকিম (৩০) নামে এক রোগীর স্বজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঘটনার দিন রাতেই পাঁচলাইশ থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মোস্তাকিমের নাম উল্লেখ করে মামলা করে। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ৫০ থেকে ৬০ জনকে মামলার আসামি করা হয়।

 

পাঁচলাইশ থানার ওসি (তদন্ত) সাদেকুর রহমান বলেছিলেন, ‘চমেক হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিসের ফি কমানোর দাবিতে সড়ক অবরোধ করে রোগী ও তাদের স্বজনরা। এসময় সড়কের উপর থেকে সরে গিয়ে আন্দোলন করার অনুরোধ জানালে তারা পুলিশের উপর চড়াও হন। একপর্যায়ে তারা কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। তাই পুলিশের উপর হামলা ও কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে এ মামলা দায়ের করা হয়।’

 

পিপিপি’র (পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপ) আওতায় ভারতীয় প্রতিষ্ঠান স্যান্ডর ডায়ালাইসিস (প্রা.) লিমিটেড ডায়ালাইসিস সেবা দিয়ে আসছে চমেক হাসপাতালে। আগে সরকারিভাবে প্রতি সেশনে ৫১০ টাকা ও বেসরকারিভাবে ২ হাজার ৭৯৫ টাকা করে ডায়ালাইসিস করা হতো। কিন্তু প্রতি বছর চুক্তি অনুযায়ী ৫ শতাংশ বেড়ে গিয়ে ডায়ালাইসিস ফি দাঁড়িয়েছে সরকারিভাবে ৫৩৫ টাকা ও বেসরকারিভাবে ২ হাজার ৯৩৫ টাকা। এ কারণেই রোগীরা ফি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে নামে। সেই আন্দোলনে নেমে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ও আদালতে পর্যন্ত উঠতে হয়েছে রোগীর স্বজন মোস্তাকিমকে।

 

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে পরিচালিত স্যান্ডোর ডায়ালাইসিস সেন্টারের বিরুদ্ধে শুধু ফি বৃদ্ধি নয় রয়েছে অপচিকিৎসা ও চিকিৎসাজনিত অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ । গত বছর ৫ জুন স্যানডোর ডায়ালাইসিস সেন্টার এ কর্মরত ডাক্তার রেহনুমা ও সেখানকার টেকনিশিয়ানদের চিকিৎসা জনিত অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় কিডনি রোগী সাফিয়া খানমের অসহায় মৃত্যু হয় । এই ঘটনায় সাফিয়া খানমের পরিবার একই বছর ১৫ জুন

সংবাদ সম্মেলন করে স্যানডোর ডায়ালাইসিস কর্তৃপক্ষ এবং সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার রেহনুমা ও টেকনিশিয়ানদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনেন এবং কঠোর শাস্তি দাবী করেন । সংবাদ সম্মেলনে , সেদিন সাফিয়া খানমের পরিবারের সদস্যদের আহাজারিতে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছিল । জাতীয় এবং চট্টগ্রামের গণমাধ্যমগুলোতে পরের দিন ফলাও করে এই সংবাদ প্রচারিত হলে চট্টগ্রাম সহ সারা বাংলাদেশের ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল। গণমাধ্যমের ব্যাপক চাপ এবং ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় স্যানডোর ডায়ালাইসিস কর্তৃপক্ষ ও ডাক্তার রেহনুমার বিরুদ্ধে ।