ভালো, সৎ আর মেধাবীদের আনতে না পারলে রাজনীতি চরিত্রহীন হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে এখন আর ভালো মানুষ আসতে চায় না। ছাত্র রাজনীতিতেও একই অবস্থা। কিন্তু রাজনীতিতে ভালো মানুষ না এলে খারাপ লোক রাজনীতিতে ঢুকে পড়বে। রাজনীতি খারাপ হয়ে যাবে। দেশের মন্ত্রীত্বে খারাপ আসবে।’
রবিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় পার্টি-জেপির ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আসলে আমার ১৭ বছরের মন্ত্রীত্ব বিরল। আওয়ামী লীগের মতো দলে তিন বার সাধারণ সম্পাদক। অনেক পেয়েছি। তবে সবই ওপরে আল্লাহ নিচে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার কৃতিত্ব।’
পঁচাত্তরে ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড হয়েছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীতে এমন হত্যা আর হয়নি। এই হত্যাকাণ্ডের কারণেই ধীরে ধীরে রাজনীতির অঙ্গনে উঁচু দেয়াল সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগ একদিনে একশ সেতু উদ্ধোধন করেতে পারে কিন্তু রাজনীতিতে আমরা কোনো উঁচু দেয়াল সৃষ্টি করিনি।’
‘রাজনীতিতে অনেক ভালো মানুষ আসতে চায় না। কোনো শিক্ষিত, সৎ মানুষ আসতে চায় না। ছাত্র রাজনীতিতেও ভালো মানুষ আসতে চায় না। কিন্তু তারা না এলে, খারাপ লোক রাজনীতিতে এলে রাজনীতি খারাপ হয়ে যাবে। দেশের মন্ত্রীত্বে খারাপ আসবে।’
নষ্ট রাজনীতিকরা নষ্ট রাজনীতিকে বাঁচিয়ে রাখে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে ভালো মানুষেরা নেই। আমরা রাজনীতিকে আকর্ষণীয় করতে পারিনি। ছাত্র রাজনীতির সুনামের ধারা হারিয়ে গেছে। ভালো, সৎ ও মেধাবীদের রাজনীতিতে আনতে হবে। নইলে রাজনীতি চরিত্রহীন হয়ে যাবে।’
বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেও বাঁচাতে হবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশের রাজনীতিকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে হবে। এদেশের গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে, এদেশের উন্নয়নকে বাঁচাতে হলে দেশ পরিচালনায় শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই।’
‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদকে প্রতিহত করতে হবে। আমাদের বিজয় হয়েছে কিন্তু আমাদের বিজয়ও সুসংগঠিত নয়। বিজয়কে সুসংহত করতে হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাঁচাতে হবে।’
‘খেলা হবে’ স্লোগান দেওয়ায় তার সমালোচনা করেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের আবারও ‘খেলা হবে’ উল্লেখ করে বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে, ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে, ভোটচুরির বিরুদ্ধে খেলা হবে। আগামী নির্বাচনে খেলা হবে। আগামী জানুয়ারিতে ফাইনাল খেলা হবে।’
জাতীয় পার্টি-জেপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সভাপতিত্বে দলটির ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু। এছাড়া ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়াসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।