ছাত্রলীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে মঞ্চ ভেঙে পড়ে যান নেতারা। এতে অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পড়ে যাওয়া নেতাদের কেউ গুরুতর আহত হননি।
পরে মঞ্চে নেতাদের আধিক্য নিয়ে অসন্তোষ জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যে কোনো অনুষ্ঠানে গেলে সামনের লোকের চেয়ে মঞ্চে লোক বেশি থাকে। কিন্তু এত নেতা আমাদের দরকার নেই। আমাদের আরও কর্মী দরকার। স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন স্মার্ট কর্মী।
শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ছাত্রলীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর মূল আয়োজনটা ছিলো শোভাযাত্রার। সেটি শুরুর আগে শোভাযাত্রা উদ্বোধনের জন্য আয়োজন করা হয় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের। কিন্তু সেই ছোট্ট মঞ্চেই জড়ো হন নতুন-পুরাতন সব নেতারা। ফলে প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যরে মাঝপথেই ধ্বসে পড়ে মঞ্চটি।
মঞ্চে নেতাদের আধিক্য বরাবরই ছাত্রলীগকে সতর্ক করে আসছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। দুদিন আগেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে দেশে ফেরার পর এই ঘটনা। দুর্ঘটনার পর উঠে দাঁড়িয়ে তিনি ক্ষোভের সাথে বললেন, এতো নেতার দরকার ছিলো না।
মঞ্চ ভেঙ্গে পরার সময় ছাত্রলীগ নেতারা তাৎক্ষণিক ওবায়দুল কাদেরকে জড়িয়ে ধরলে তিনি বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা পান। পরে পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করলে আবার বক্তব্য দেয়া শুরু করেন ওবায়দুল কাদের।
রাজনীতিতে কমিটমেন্ট থাকলে মূল্যায়ন একদিন হবেই মন্তব্য করে কাদের বলেন, ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্বকে বলবো, অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে। সামনে অনেক চ্যালেঞ্জিং টাইমস অপেক্ষা করছে। আজকে অঙ্গীকার করব, আমরা ছাত্রলীগে সুবাস ছড়াবো, আলো ছড়াবো।
দেরি না করে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়ারও নির্দেশ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কমিটি হয়েছে প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি, বাকি কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে হবে দ্রুত। অনেক কর্মী আশা নিয়ে বসে আছে, দেরি করার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, সময় বেশি নেই। অনেক চ্যালেঞ্জ, ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে হচ্ছে। আমরা প্রতিকূল স্রোতের মধ্য দিয়ে সাতার কেটে যাচ্ছি, এ যুদ্ধে জয়ী হতে হবে। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, তাদের পৃষ্ঠপোষক বিএনপির বিরুদ্ধে আমাদের বিজয়ী হতে হবে।
‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণ করতে হবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং সময় পার করছি, সামনে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট দেশ বিনির্মাণ করতে হবে। ছাত্রলীগকে বলতে চাই তোমাদের কাছে স্মার্ট নেতৃত্ব চাই।
ছাত্রলীগকে অভিনন্দন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ছাত্রলীগ আমাদের প্রথম প্রেম, ৭৫তম জন্ম দিবসে ৭৫ বার অভিনন্দন জানাই। আমরা সবাই ছাত্রলীগের আন্দোলন সংগ্রামের সৃষ্টি। রাজনীতি কমিটমেন্টের বিষয়, কমিটমেন্ট থাকলে মূল্যায়ন একদিন হবেই।
তিনি আরও বলেন, অনেক সংগ্রাম আন্দোলনের বাঁক ফেরিয়ে আজ আমি তিন তিনবারের সাধারণ সম্পাদক। ১৭ বছরের মন্ত্রী। কে আমি? আমি ছাত্রলীগ। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, আমরা শেখ হাসিনার নিবেদিত প্রাণ কমিটমেন্ট কর্মী, এটাই আমাদের পরিচয়।