খুলনায় মায়ের স্মৃতি বিজড়িত জমি ও পাট গোডাউন ঘুরে দেখে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) বাদ মাগরিব খানজাহান আলী সেতু হয়ে তিনি টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
এর আগে বিকেল ৪টার দিকে ব্যক্তিগত সফরে প্রধানমন্ত্রী খুলনার নগরঘাট খেয়াঘাট সংলগ্ন ভৈরব নদের তীরে পৌঁছান। বিকেলে দিঘলিয়ায় অবস্থিত মা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের স্মৃতি বিজড়িত জমি ও পাট গোডাউন ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় বোন শেখ রেহেনাসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে প্রায় ৪০ মিনিট অবস্থান করেন প্রধানমন্ত্রী।
দিঘলিয়া থেকে প্রধানমন্ত্রী খুলনা নগরীর শেরে বাংলা সড়কে অবস্থিত ছোট চাচা শেখ আবু নাসেরের বাড়িতে যান। বঙ্গবন্ধু খুলনায় এসে এই বাড়িতে অবস্থান করতেন। সেখানে দলের নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী মাগরিবের নামাজ আদায় শেষে সড়ক পথে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে খুলনা ত্যাগ করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই ও বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, সংসদ সদস্য শেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েলসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী পারিবারিক সফরে খুলনায় এসে দিঘলিয়ায় মায়ের নামে কেনা জমি ও গোডাউন ঘুরে দেখেন। সেখানে কিছুসময় অবস্থান করার পর প্রধানমন্ত্রী তার ছোট চাচা শেখ আবু নাসেরের বাড়িতে যান। বিকেলে সেখানে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, নগর সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, আমি এবং সদর ও সোনাডাঙ্গা থানা আ.লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী চা খেতে খেতে আমাদের দলের সাংগঠিক বিষয়ে দিক নানা নির্দেশনা দেন। এরপর মাগরিবের নামাজ আদায় করে সন্ধ্যা ৬টার পর পর তিনি সড়ক পথে খানজাহান আলী সেতু হয়ে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
জানা গেছে, খুলনায় ব্যক্তিগত সফর শেষে সড়ক পথে টুঙ্গিপাড়ায় ফিরবেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা রাতযাপন করবেন।
এর আগে সকাল সোয়া ৮টার দিকে সড়ক পথে গণভবন থেকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছান তিনি। বেলা ১১টা ১০ মিনিটে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে বঙ্গবন্ধুসহ পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট সকল শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ, বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন তিনি। বিকেল ৩টায় টুঙ্গিপাড়া থেকে সড়ক পথে তিনি খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে দিঘলিয়ার ভৈরব নদের কোলঘেঁষে নগরঘাট এলাকায় ১ একর ৪৪ শতক (৪ বিঘা) জমিতে পাট গোডাউন ও এক কক্ষ বিশিষ্ট ঘরসহ জমি কেনেন। ওই সময় বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই শেখ আবু নাসের এ জমি দেখাশোনা করতেন।
বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী এ জমির মালিক হলেও জমিটির কথা জানতেন না তিনি। ২০০৭ সালে তিনি তার ব্যক্তিগত আইনজীবীর মাধ্যমে এ জমির খোঁজ পান। বঙ্গবন্ধুর পুরাতন সেই পাট গোডাউন ভেঙে সেখানে আধুনিক গুদাম ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। নদীর তীরবর্তী স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে রেস্ট হাউস। গোডাউন সংলগ্ন পাকা রাস্তার নামকরণ হয়েছে শেখ রাসেলের নামে।
এর আগে সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ৩ মার্চ খুলনায় এসেছিলেন।