পুঁজিবাজার এখন খারাপ, তবে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান।
তিনি বলেন, বাজার যখন বেশি খারাপ হয়, তখনই ভালো হওয়ার একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়। আপনারা সাক্ষী আছেন ২০২০ সালের প্রথমদিকে বাজারের যে করুণ অবস্থা হয়েছিল এবং ফ্লোরপ্রাইস দেওয়া হয়েছিল, তখন কি কেউ ভেবেছিল ২০২০ সালের ক্লোজিং এতো ভালো হবে। ২০২০ ও ২০২১ সালে পুঁজিবাজার কিন্তু যথেষ্ঠ ভালো অবস্থানে ছিল। আজ আমরা যে অবস্থায় আছি, সেটা নিয়ে হতাশ না হয়ে আমাদের ধের্য ধরতে হবে এবং গঠনমূলক চিন্তা করা উচিত।সংবাদ সম্মেলনে বিএমবিএর সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান বলেন, আমাদের বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হয়তো ওনাদের কাছে তথ্য-উপাত্তের ঘাটতি থাকে। অথবা বোঝাপড়ার ঘাটতি থাকে। অথবা কারো মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে সে বিনিয়োগ করে। তখনই সে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বেশ কিছুদিন ধরে পুঁজিবাজারে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের নেতিবাচক প্রবণতার ক্ষেত্রে পলিসিগত দিক থেকে কিছুটা সমস্যা আছে বলে আমরা মনে করি। সেই পলিসিগত বিষয়গুলো যতক্ষণ অ্যাড্রেস না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা সুশৃঙ্খল বা শক্তিশালী পুঁজিবাজার দেখবো, সেই প্রত্যাশা করতে পারি না। পলিসি লেভেলেও কাজ করার আছে। আমার জানা মতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আন্তরিকভাবে কাজ করছে।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, আপনারা সবাই জানেন আমাদের পুঁজিবাজারে খুবই ক্রান্তিকাল যাচ্ছে। এ সময়টাতে আমাদের সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। সামনের ভালো একটা দিনের প্রত্যাশায় থাকতে হবে। সেই সঙ্গে নিজের যে বিনিয়োগ আছে, সে বিষয়ে খুব বেশি পরিমাণে মনোযোগী হতে হবে। যে কোম্পানিগুলো আমরা নির্বাচন করবো, সেই নির্বাচন হতে হবে ভালো কোম্পানি। যদিও এখন বিনিয়োগ আটকে আছে, তারপরও একটু ভালো সময় এলে যাতে আমরা রিকভারি করতে পারি।
তিনি বলেন, আমাদের পুঁজিবাজারে ৮০ শতাংশ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী। আপনারা জানেন পুঁজিবাজার খুবই সেনসেটিভ জায়গা। এখানে অনেক কিছু শেখার আছে। এ ধরনের এক্সপোতে বাজারের ভালো-খারাপ, সম্ভাবনা, সামনের দিনগুলো নিয়ে আলোচনা হয়।ব্রোকারেজ হাউস থেকে শুরু করে যারা এখানে আসেন, তারা উপকৃত হন।
অর্থসূচকের সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, পুঁজিবাজার যে খারাপ সময় পার করছে, তা সাময়িক। অবশ্যই এই বাজার তার গতিশীলতা ফিরে পাবে। এজন্য সব স্টেকহোল্ডারকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। সামগ্রিক বাজারের গভর্ন্যান্সের মান বাড়াতে হবে। মানুষের মধ্যে পুঁজিবাজার ও অর্থনীতি নিয়ে অতিমাত্রায় যে আতঙ্ক বিরাজ করছে, তা কমানোর চেষ্টা করতে হবে। পাশাপাশি বিনিয়োগ শিক্ষাকেও জোরদার করতে হবে। কারণ বিনিয়োগকারীরা আরও সচেতন এবং সতর্ক হলে দুষ্টচক্র সহজে কারসাজি করতে পারবে না। অন্যদিকে হুজুগ ও গুজব কমে আসবে।