আফগানিস্তানে বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের পড়াশোনা ও বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) কাজ করার ওপর ক্ষমতাসীন তালেবানের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
রয়টার্স জানিয়েছে, ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ এ নিন্দা জানিয়েছে। সেই সঙ্গে দেশটিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারী ও মেয়েদের পূর্ণ, সমান ও অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টির জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আফগানিস্তানে হাইস্কুলে, বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়ে ও নারীদের পড়াশোনার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তা মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধার ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান ক্ষয়ের প্রতিনিধিত্ব করে
সম্প্রতি নারীদের কাজ করা নিষিদ্ধ করে দিয়েছে তালেবান। তালেবানের এ নিষেধাজ্ঞার পর আফগানিস্তানের পাঁচটি শীর্ষ বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) সে দেশে কাজ স্থগিত করেছে। কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল, নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল (এনআরসি) এবং সেভ দ্য চিলড্রেন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ‘আমাদের নারী কর্মী’ ছাড়া কাজ করা সম্ভব নয়।
ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটিও এরই মধ্যে তাদের কাজ স্থগিত করেছে। ইসলামিক রিলিফ জানিয়েছে, তারা তাদের অধিকাংশ কার্যক্রম বন্ধ করেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবানরা ক্রমাগতভাবে নারীদের অধিকার দমন করে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের উপস্থিতি নিষিদ্ধের দিন কয়েকের মধ্যে এনজিওতেও নারীদের কাজ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়।
এর আগে তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এনজিওতে কাজ করা নারীরা ঠিকমতো হিজাব না পরে শরিয়া আইন লঙ্ঘন করছে।
তালেবান সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে গত শনিবার এক চিঠিতে দেশি-বিদেশি সব এনজিওতে নারীদের নিষিদ্ধ করা হয়। আফগানিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আবদেল রহমান হাবিব বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়টি অবগত করতে এনজিওগুলোতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। এই নিষেধাজ্ঞা যদি কোনো সংস্থা অমান্য করে, তাহলে সেই এনজিওর নিবন্ধন বাতিল করা হবে।
নারীদের নিষিদ্ধ করার বিষয়টি জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার ওপরও কার্যকর কি না, তা জানা যায়নি। আফগানিস্তানে ত্রাণ ও উন্নয়ন কাজে জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি সংস্থা দেশটিতে কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার আফগানিস্তানের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে তালেবান। পরদিন থেকেই কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের আর প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন আফগান নারীরা।
সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি