অসম সাহসের সঙ্গে বাংলাদেশকে আরও দুর্বার গতিতে উন্নয়ন আর সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ এখন অনেক ক্ষেত্রেই অগ্রগামী।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেকোনো কাজ করতে গেলে অবশ্যই সাহসের প্রয়োজন হয়, সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হয়। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে প্রতিটি কাজ পরিকল্পনা নিয়ে সম্পন্ন করেছে। যে কারণে মাত্র ১৪ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ী প্রান্তে মঙ্গলবার দুপুরে মেট্রোরেলের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের পর সুধী সমাবেশে বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
এর আগে বেলা ১১টা ৫ মিনিটে তিনি মেট্রোরেলের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন। এসসময় সরকারপ্রধানের সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা।
অন্যদের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘হবে জয়’ কবিতার ‘অসম সাহসে আমরা অসীম/সম্ভাবনার পথে ছুটিয়া চলেছি,/সময় কোথায় পিছে চাব কোন মতে!’ পংক্তি উদ্ধৃত করেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা সাহসের সঙ্গে করোনাভাইরাস মোকাবিলা করেছি। পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমও আমরা এগিয়ে নিয়ে যাবো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বল্পন্নোত দেশ থেকে উন্নত দেশে রূপান্তরিত হওয়ার পথে। এ যাত্রায় দেশের মানুষের অবদান সবচেয়ে বেশি। তারা সহযোগিতা না করলে পদ্মা সেতু হত না, মেট্রোরেল হতো না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মেট্রোরেল চালাতে আর বিদেশের ওপর নির্ভর করতে হবে না। আমরা নিজেরাই গ্র্যাজুয়েট তৈরি করে এটি পরিচালনা করতে পারব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে প্রথম উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত উদ্বোধন করেছি। বাকি কাজ শেষে মতিঝিল পর্যন্ত উদ্বোধন করব। মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। এটি প্রথম দেশের বৈদ্যুতিক রেল, দূর নিয়ন্ত্রিতভাবে পরিচালিত হবে। এটির সর্বোচ্চ গতি হবে প্রতি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার। এটি পরিবেশবান্ধব, তাই যুগপোযোগী একটি যান হবে মেট্রোরেল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেছিলাম ঢাকার যানজট নিরসনে কাজ করব। আজকে মেট্রোরেল সেই মাইলফলক স্পর্শ করেছে। আরও কাজ চলছে, সমীক্ষা চলছে।’
‘এটি বাস্তবায়িত হওয়ার পর নতুন ১২ হাজার গ্র্যাজুয়েট ও মাঠ প্রকৌশলীর কর্মসংস্থান হবে। যেটা বেকারত্ব শুধু দূর না, আমাদের দক্ষ জনশক্তি গড়ে উঠবে। ফলে মেট্রোলের নেটওয়ার্ক নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিদেশের উপর নির্ভর করতে হবে না। আমরা নিজেরাই সব পরিচালনা করতে পারব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মেট্রোরেলে নারীদের জন্য আলাদা কোচ থাকবে, প্রতিবন্ধী যাত্রীদের জন্য সুব্যবস্থা থাকবে, শিশুদের পরিচর্যার ব্যবস্থা থাকবে মায়েদের জন্য। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিনা পয়সায় ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারবেন।’
মেট্রোরেল ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘অনেক টাকা খরচ করে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মেট্রোরেল গড়ে তোলা হয়েছে। তাই যারা ব্যবহার করবেন তারা একটু সচেতন হবেন। এর মান নিশ্চিত রাখা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রাখার চেষ্টা করবেন।’