ঢাকাবৃহস্পতিবার, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের কোনো বান্ধবী যদি বলত চলো সিনেমা দেখতে যাই, তাহলে মনে অনুরণন হতো

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
ডিসেম্বর ২৭, ২০২২ ৮:০৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রশিল্প স্বাধীনতাসংগ্রামে ও স্বাধীনতার পর দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। চলচ্চিত্রশিল্প যে উচ্চতায় ছিল তা মাঝখানে থমকে গিয়েছিল। ভালো চলচ্চিত্রের অভাবে সিনেমা হলগুলো বন্ধ হতে হতে এক শর নিচে নেমে গিয়েছিল। কিন্তু চলচ্চিত্রশিল্প আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ‘হাওয়া’ আর ‘পরাণ’ চলচ্চিত্র মুক্তির পর হলের সংখ্যা এখন ৩০০-তে উন্নীত হয়েছে।আজ মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের চলচ্চিত্র’ বিষয়ক সেমিনার ও ‘বাচসাস সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা-২০২২’ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে আরবি হরফে বাংলা লেখানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। এখানে না পারলেও তারা পশ্চিম পাঞ্জাবে পাঞ্জাবি ভাষায় হরফ বদলে আরবি করেছে। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ও বেতারে রবীন্দ্রনাথের গান নিষিদ্ধ করেছে। দেশ স্বাধীন না হলে আমাদের সংস্কৃতি, ভাষা-কৃষ্টি আমরা সব হারিয়ে ফেলতাম।’

‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৫৭ সালে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে’ জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বন্ধ সিনেমা হল পুনরায় চালু করা, নতুন সিনেমা হল নির্মাণ, সিনেমা হলের আধুনিকায়নের জন্য এক হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ ঋণ তহবিল গঠন করেছেন। আমরা চাই প্রতিটি উপজেলায় একাধিক সিনেমা হল হোক।’চলচ্চিত্রের অনুদান প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অনুদানের পরিমাণ বাড়িয়েছি। অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রগুলো হলে মুক্তি দেওয়ার বাধ্যবাধকতা চালু করেছি। সিনেমা বানিয়ে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বা চ্যানেলের কাছে বিক্রি করে দিলে সেটি চলচ্চিত্রশিল্পের মঙ্গল বয়ে আনে না।’

 

‘হলে গিয়ে চলচ্চিত্র দেখার ক্ষেত্রে মানুষের রুচি ও ব্যস্ততার পরিবর্তন হয়েছে’ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত না হলে মানুষ এখন সিনেমা হলে যেতে চায় না। মানুষ সিনেমা দেখতে গিয়ে একটু ঘোরাঘুরি, কেনাকাটা ও খাওয়াদাওয়া করতে চায়। সিনেপ্লেক্স এটার চাহিদা মেটাতে পারছে। এ জন্য সিনেপ্লেক্সগুলো ব্যবসা করছে। সিঙ্গেল স্ক্রিন সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেলেও সিনেপ্লেক্স বাড়ছে।’

ছাত্রজীবনে চলচ্চিত্র দেখার অভিজ্ঞতা নিয়ে রসিকতা করে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের কোনো বান্ধবী যদি বলত চলো সিনেমা দেখতে যাই, তাহলে মনে অনুরণন হতো।’

হাওয়া’ চলচ্চিত্রের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “হাওয়া কলকাতায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়েছে। এক কিলোমিটার লম্বা লাইন পড়েছিল ‘হাওয়া’ সিনেমার টিকিটের জন্য। দুপুর ২টায় সিনেমা শুরু হলেও লাইন পড়েছে সকাল ৯টা থেকে। এ দৃশ্য ‘হাওয়া’র নির্মাতারা ভাবতে পারেনি, আমিও ভাবতে পারিনি।” 

চলচ্চিত্রশিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশে বাচসাসের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, ‘চলচ্চিত্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের পর বাচসাস পুরস্কার আলোচিত ও সমাদৃত।’

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ও অবজারভার পত্রিকার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘ফিদেল কাস্ত্রো বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু হিমালয়ের মতো। হিমালয়ের বর্ণনা শেষ করা যাবে না। চলচ্চিত্র বঙ্গবন্ধুর কাছে অত্যন্ত প্রিয় ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও। তিনি চলচ্চিত্র দেখেন। তিনি শিল্পীদের পছন্দ করেন।’

অনুষ্ঠানে মুহম্মদ জাফর ইকবালের মুক্তিযুদ্ধের গল্প অবলম্বনে ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ছবি ‘একজন দুর্বল মানুষ’ প্রদর্শন করা হয় এবং বাচসাসের সদস্য সাতজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা দেওয়া হয় বাচসাসের পক্ষ থেকে।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সাংবাদিক নেতা শাবান মাহমুদ, বাচসাসের সভাপতি রাজু আলীম প্রমুখ।