বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং তাঁর স্ত্রী তাহেরা আলমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্লট জালিয়াতি ও নকশা বহির্ভূতভাবে হোটেল সারিনা নির্মাণের অভিযোগে এ মামলা হয়।
আজ সোমবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির উপপরিচালক সেলিনা আখতার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদক সচিব মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক প্রেসিডেন্ট আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, তার স্ত্রী তাহেরা খসরু আলম, শ্যালিকা সাবেরা সরোয়ার নীনা ও তার স্বামী গোলাম সরোয়ার এবং রাজউকের নকশা অনুমোদন শাখার বিল্ডিং ইন্সপেক্টর আওরঙ্গজেব নান্নু।
মামলাটির এজাহারে বলা হয়, আসামিরা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ঢাকা কর্তৃক চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানাধীন বনানী এলাকার ১৭ নং রোডের ২৭নং প্লটটি ডেভেলপ করার নামে ওই প্লটের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ২৫নং প্লট ক্রয়পূর্বক অনুমোদিত নকশা না মেনে উভয় প্লটে যথাক্রমে ২২ তলা ও ২১ তলা ভবন নির্মাণ শেষে পাঁচ তারকা হোটেল সারিনা ইন লিমিটেড পরিচালনা করে পরস্পরের সঙ্গে যোগসাজশে প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণপূর্বক একে অপরের সহায়তায় নিজেদেরকে লাভবান করার দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪২০ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন (২নং আইন) এর ৫(২) ধারায় অপরাধ করায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং তার স্ত্রী তাহেরা খসরু আলমের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কমিশন কর্তৃক নির্দেশ প্রদান করা হয়।
তাদের দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে দেখা যায়, অভিযুক্ত আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও তার স্ত্রী তাহেরা খসরু আলম উভয়ে ঢাকাস্থ বনানী এলাকার ১৭ নং রোডের ২৭ ও ২৫ নং প্লটে অবস্থিত পাঁচ তারকা হোটেল সারিনা ইন লিমিটেডের শেয়ার হোল্ডার ছিলেন। জব্দকৃত এবং সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় আরও দেখা যায় যে, অভিযুক্ত আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, তার স্ত্রী মিসেস তাহেরা খসরু আলম যৌথভাবে তার ভায়রা ভাই গোলাম সরোয়ার এবং শ্যালিকা মিসেস সাবেরা সরোয়ার নীনার সঙ্গে হোটেল সারিনা ইন লি. নামক পাঁচ তারকা হোটেল ব্যবসার সাথে যুক্ত থাকার বিষয়টি গোপন করে গেছেন।
এছাড়াও আসামি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও তার ভায়রা গোলাম সরোয়ার বনানী ১৭নং রোডের ২৫নং প্লটটি, যা বসতি টাওয়ার নামে পরিচিত সেটি যৌথ নামে ক্রয় করে রাজউকের অনুমোদিত ১৫ তলা নকশার স্থলে ২১ তলা ভবন নির্মাণ করেন। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের প্রেসিডেন্ট, সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে পরিকল্পিতভাবে নানা কৌশলে প্রথমে নিজের ভায়রাকে দিয়ে উক্ত প্রতিষ্ঠানের (সিএসই) বর্ণিত ২৭ নং প্লটের ডেভেলপার নিযুক্ত করে পরে সেখানে নিজে স্ত্রীসহ যুক্ত হয়ে প্লটটি আত্মসাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন।