সকাল আটটা, চারদিকে কুয়াশায় মোড়া। এর মধ্যে দেখা গেল, একদল নারী রাস্তায় ঝাড়ু দিচ্ছেন। তার পাশেই একটি ফলক ঘিরে কর্মব্যস্ত কয়েকজন শ্রমিক। এর দক্ষিণ দিকে কয়েক পা এগোলেই দেখা যায়, কেউ কেউ ফুলগাছের চারা লাগাচ্ছেন। আবার কয়েকজন এক দিন আগে লাগানো ফুলসহ গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত। এর মধ্যেই রাস্তার মাঝখানে একটি তিনতলা স্থাপনার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন আরেক দল লোক। এই চিত্র আজ রোববার সকালে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে মেট্রোরেল স্টেশনের। দুই দিন পরে বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) ওই স্টেশন থেকেই ঢাকার গণপরিবহনে নতুন যুগের সূচনা হবে। ওই দিন বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রথম দফায় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হচ্ছে। এ উপলক্ষে মেট্রোরেলের এই অংশে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। রাস্তা ঝাড়ু দেওয়া থেকে স্টেশনগুলো ধোয়ামোছায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন শ্রমিকেরা। মেট্রোরেলের নিচের সড়কের কোথাও কোনো কাজের কিছু অংশ বাকি থাকলে তা শেষ করা হচ্ছে। মেট্রোরেলের নিচের রাস্তায় সড়ক বিভাজক তৈরি করা হয়েছে, তার দুই পাশে লাগানো হচ্ছে ফুলের গাছ। সৌন্দর্যবর্ধনে এসব গাছ লাগানো হচ্ছে মেট্রোরেলের এই পথের অন্য অংশেও।
পল্লবীতে মেট্রোরেলের কাজ করা মো. মানিক আলী বলেন, উদ্বোধনের আর মাত্র দুই দিন বাকি। টুকটাক কিছু কাজ ছিল। সেগুলো করা হচ্ছে। মেট্রোরেলের অন্য স্টেশনগুলোতেও শ্রমিকেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
মেট্রোরেল উদ্বোধনের পরদিনই সাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। নতুন এই পরিবহনব্যবস্থা নিয়ে নগরবাসীর রয়েছে বিপুল আগ্রহ। মিরপুরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী আবদুল হাকিম বলেন, ‘আমরা যাঁরা মিরপুরে বসবাস করি, তাঁরা কিন্তু মেট্রোরেলের নির্মাণকাজের জন্য অনেক কষ্ট সহ্য করেছি। এখন মেট্রোরেল চালু হতে যাচ্ছে। রাস্তাঘাট অনেক সুন্দর হয়েছে। আমরা অনেক খুশি।’
পল্লবী এলাকায় কথা হয় রিকশাচালক আশরাফুল আলমের সঙ্গে। মেট্রোরেল নিয়ে তিনিও উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, ‘এই মেট্রোরেলের জন্য গত পাঁচ বছর মিরপুর এলাকার মানুষ অনেক কষ্ট করেছে। তিন দিন পর মেট্রোরেলে সবাই চড়তে পারবে। আমিও মেট্রোরেলে চড়ব।’