নির্বাচন এলেই একটি মহলের চক্রান্ত বেড়ে যায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সূচনা বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের কিছু বুদ্ধিজীবী আছে বুদ্ধি বেচে জীবিকা নির্বাহ করে। সেই বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে কিছু কিছু আবার আছে যারা বুদ্ধিজীবী প্রতিবন্ধী।
আমি বলব, এই বুদ্ধিজীবী প্রতিবন্ধী যারা, তারা কোনো উন্নয়নই দেখে না। আর কিভাবে আওয়ামী লীগকে হটানো যায় ক্ষমতা থেকে, সেই চক্রান্তে ব্যস্ত। ’ সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্তের কারণ ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেন ব্যস্ত তার কারণ একটাই—যখন কোনো অস্বাভাবিক পরিস্থিতি থাকে, হয় মার্শাল ল হলো বা ওই যে ইয়াজউদ্দিন, মইনুদ্দিন, ফখরুদ্দীন—ওই রকম সরকার যদি আসে; যখন গণতন্ত্র থাকে না, তখন তাদের মূল্য বাড়ে। ’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে তাদের মূল্য খুব বেড়ে যায়। কারণ যারা এভাবে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল অথবা মার্শাল ল দিয়ে ক্ষমতা দখল করে, তারা তো জনগণের সমর্থন পায় না। তখন এই বুদ্ধিজীবীরা দাঁড়িয়ে পড়ে। ওই যে লেখা থাকে ‘ইউজ মি’ মানে আমাকে ব্যবহার করুন, তো ওনারা ওই রকম জামাকাপড় ইস্ত্রি করে রেডি হয়ে যান; ‘ইউজ মি’, আমাকে ব্যবহার করেন এবং ওনারা ব্যবহারই হন। যখন গণতন্ত্র আসে, গণতান্ত্রিক ধারায় দেশ চলে, তখন তারা নিজেদের খুব হতাশ মনে করে। ”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তাঁদের একটা কথা বলতে চাই, তাঁরা তাঁদের জ্ঞান-বুদ্ধিটা দেশের কল্যাণে কাজে লাগাক, অকল্যাণকর কাজের জন্য তাঁরা কেন তাঁদের এই জ্ঞানটা খরচ করেন?’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৮ সালের নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করেছে এবং সেই নির্বাচন নিয়ে কারো কোনো প্রশ্ন নেই। সেই নির্বাচনে বিএনপি সিট পেয়েছিল মাত্র ৩০টি। তাহলে প্রশ্ন এখানে জনগণের ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে, সেই স্বপ্নটা কিভাবে দেখে?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা (আওয়ামী লীগ) জনগণের ভোটে নির্বাচিত হব। জনগণের আস্থা-বিশ্বাস নিয়ে আওয়ামী লীগ বারবার ক্ষমতায় এসেছে, ক্ষমতায় আসবে। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের দল। কারণ এটি জনগণের মধ্য থেকে গঠিত হয়েছে। বিএনপি সামরিক স্বৈরশাসকের পকেট থেকে গঠিত হয়েছে। তারা নিজেদের ভাগ্য গড়া ছাড়া দেশের জন্য কোনো কিছুই করেনি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছে এবং জনগণকে একটি সুন্দর ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন দিয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার দেশবাসীকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিং দিয়েছে।
গতকাল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বর্তমান মেয়াদের শেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আগামীকাল শনিবার আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। দলের সভাপতির সূচনা বক্তব্যের আগে যুব মহিলা লীগ ও ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত নেতারা ফুল দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান।