ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতেও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের জামিন নামঞ্জুর হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. আসাদুজ্জামান তাঁদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
এর আগে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদন তিনবার নাকচ করেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম)।
আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বুধবার সকালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসের পক্ষে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন তাঁদের আইনজীবীরা। বেলা ৩টায় আদালত জামিন বিষয় শুনানি গ্রহণ করেন। মির্জা ফখরুলের ও আব্বাসের পক্ষে জামিন শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার।
তাঁরা আদালতে বলেন, মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের নাম মামলার এজাহারে নেই। ঘটনার দুদিন পর তাঁদের বাসা থেকে ধরে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এই মামলার ঘটনার সঙ্গে তাঁরা জড়িত নন। দুজনই বয়স্ক, খুবই অসুস্থ। মানবিক দিক বিবেচনা করে তাঁদের জামিন মঞ্জুর করা হোক।
তবে রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু জামিনের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত ফখরুল ও আব্বাসের জামিন আবেদন নাকচ করেছেন।
৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত ও অর্ধশত আহত হন। সংঘর্ষের পর পুলিশ বিএনপির কার্যালয়ে অভিযান চালায়। ঘটনার পরদিন পল্টন, মতিঝিল, রমনা ও শাহজাহানপুর থানায় পৃথক চারটি মামলা করে পুলিশ। এতে ২ হাজার ৯৭৫ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। তাঁদের মধ্যে নাম উল্লেখ করা হয়েছে ৭২৫ জনের। তবে নাম উল্লেখ করা বিএনপির নেতাদের মধ্যে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস ছিলেন না।
‘ওপরের নির্দেশে’ ওই দুই নেতার বাসায় ৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে পৃথক অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। দুজনকে প্রথমে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে। বাসা থেকে নিয়ে যাওয়ার প্রায় ১১ ঘণ্টা পর মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তারের করা হয়েছে।’ পরে তাঁদের পল্টন থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
৭ ডিসেম্বরের সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের চার মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৮৮ জনকে। তাঁদের মধ্যে ৩১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। অন্যদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর দুজনকে (আমানউল্লাহ ও আবদুল কাদের) জামিন দেন আদালত।
কারাগারে পাঠানো নেতাদের মধ্যে রয়েছেন রুহুল কবির রিজভী, আবদুস সালাম, খায়রুল কবির, শিমুল বিশ্বাস, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী প্রমুখ। বিএনপি বলে আসছে, ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় তাদের গণসমাবেশের যে কর্মসূচি ছিল, মূলত সেটি বানচাল করার উদ্দেশ্যেই পুলিশ ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে দলের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে নেতা-কর্মীদের গণগ্রেপ্তার করেছে।