বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি দায়িত্ব ও দায়বদ্ধতা থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন, উল্লেখ করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের যদি আমরা সংবর্ধনা না জানাই তাহলে এখানকার মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে না। এতে করে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানা থেকে বঞ্চিত হবে। সামনে হয়তো মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দেয়ার সুযোগ থাকবে না। কারণ সবাই বয়স ও বার্ধক্যেরে কারণে একে একে চলে যাচ্ছেন না ফেরার দেশে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের গবেষক, লেখক ও ইতিহাসবিদদের স্থানীয় মুুক্তিযোদ্ধেদের কাছ থেকে যুদ্ধকালীন স্থানীয় বিভিন্ন অপারেশন ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করার আহবান জানান। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হারিয়ে গেলে দেশের অস্থিত্ব বিপন্ন হয়ে যাবে মন্তব্য করে তিনি নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের গৌরভ গাঁথা ও আত্মত্যাগ সর্ম্পকে ধারনা নিয়ে আগামী দিনের নেতৃত্ব গ্রহনে প্রস্তুতির নেয়ার এখনই উপর্যুক্ত সময় বলে মন্তব্য করেন।
আজ সোমবার সকালে নগরীর থিয়োটার ইনষ্টিটিউট চত্বরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে ও সচিব খালেদ মাহমুদের সঞ্চানলনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন-ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন, আবদুস সালাম মাসুম, প্যানেল মেয়র আফরোজা কালাম, কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা নঈম উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহম্মদ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার একে এম সরোয়ার কামাল, মুক্তিযোদ্ধা গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা হারিস চৌধুরী, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার প্রমূখ।
সিটি মেয়র আরো বলেন, মুুক্তিযুদ্ধসহ সবকিছুতেই চট্টগ্রাম আগ্রগামী। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষনা পর পরই চট্টগ্রাম থেকে তৎকালিণ ইপিআরের ক্যাপ্টেন রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রথম প্রতিরোধ যুদ্বের সূচনা হয়। পরদিন কালুরঘাট স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধনতার ঘোষনা পাঠ করেন আওয়ামী লীগ নেতা এম.এ হান্নান। স্বাধীনতার জন্য অনেক বড় বড় মনিষী ও রাজনীতিবিদ অনেক চেষ্টা করেও স্বাধীনতা এনে দিতে পারেনি। একমাত্র বঙ্গবন্ধু পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব হয়েছে। কারণ তিনি ছিলেন জনগণের নেতা। জনগণের মতামত কে তিনি প্রতিফল ঘটাতে পেরেছন। সেই কারণেই বঙ্গবন্ধু হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। মনে রাখতে হবে ইতিহাসের সন্তানদের কোনদিন মৃত্যু হয়না। ইতিহাস তাদের অমর করে রাখে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু তনয়া প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে এই ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের কাছে আবার সঠিকভাবে তুলে ধরেন। সেই জন্য বাংলাদেশ আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন বলেন, ভারত-বাংলাদেশ বন্ধু প্রতিমদেশ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল ভারত সরকার। ভারতের মিত্রবাহিনী সরাসরি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে ছিল তাদের যৌথ আত্মত্যাগের আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর সংগে ভারত সরকারে আন্তরিক সর্ম্পক ছিল উল্লেখ করে তিনি জানান বর্তমানেও দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ কুটনৈতিক সম্পর্ক অটুট রয়েছে।