আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, হত্যা, খুন, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতার পালাবদল ছিল। আজ নির্বাচনের মাধ্যমে সেই ক্ষমতার পালাবদল সৃষ্টি হয়েছে। আজ তাদের (বিএনপির) সেটা সহ্য হয় না। তারা আন্দোলন করার জন্য ডিসেম্বরকে বেছে নিয়েছে। ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস। এই বিজয়ের উৎসব থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়ার জন্য, মানুষকে বিপথগামী করার জন্য, বিজয়ের মাসে ষড়যন্ত্র করছে। এই ডিসেম্বর মাসে তারা বিভিন্ন রকম তারিখ দিয়ে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে মহান বিজয় দিবস ও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তন প্রাঙ্গণে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, বিএনপির গাত্রদাহ নিবারণ করার জন্য আজ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন, ১৪ দল থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবাই সজাগ, সচেতন। তারা বলেছিল ১০ তারিখে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হবে, খালেদা জিয়া দেশ শাসন করবে। তাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন তো দূরের কথা, আজ তারা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। তারা আজ বলছে, তাদের নাকি ১০ তারিখ জয় হয়েছে। তারা সরকারের সঙ্গে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মুচলেকা দিয়ে গোলাপবাগে সভা করেছে এটাই নাকি তাদের জন্য বিজয়। এই বিজয় নিয়ে তারা সন্তুষ্ট। আমরাও চাই তারা সন্তুষ্ট থেকে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখুক।
আমির হোসেন আমু বলেন, তারা নাকি সংবিধান কমিশন গঠন করেছে সংবিধান সংশোধনের জন্য। গাত্রদাহ কোথায়? গাত্রদাহ এই সংবিধান। জাতীয় চার মূলনীতি— গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্ম নিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ যেটা জিয়াউর রহমান ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল। আজ সেটা পুনঃস্থাপিত হয়েছে। এটা তাদের গাত্রদাহ। আজ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ আন্তর্জাতিক হ্যারিটেজ হিসেবে ইউনেস্কো অন্তর্ভুক্ত করেছে। সে কারণে তাদের গাত্রদাহ। তাই সংবিধান নিয়ে আজ তারা কথা বলে।
তিনি আরও বলেন, আজ এ দেশে স্বাধীনতাকামী মানুষ, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির মানুষ, গণতান্ত্রিক মানুষ, প্রগতিশীল মানুষ, অসাম্প্রদায়িক মানুষ বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। এখানে ফাটল ধরাবার কোনো সুযোগ নেই। সেই ঐক্যবদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৪ দল এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।
আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাসের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের শরীক সাম্যবাদীর দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম, গণ আজাদী লীগের সভাপতি এস কে শিকদার, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, গণতন্ত্র পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, তরিকত ফেডারেশন চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরিন আক্তার। এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি প্রমুখ।