আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি জনগণকে পরোয়া করে না। ওরা ক্ষমতায় গেলেই নির্বাচন নিয়ে, মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। এটা বিএনপির চরিত্র। তার কারণ একটাই, ওরা গণমানুষের দল না। ক্ষমতা ওদের কাছে ভোগের বস্তু, লুটের সুযোগ, লুটের মাল। আর বাংলাদেশের মানুষ তাদের কাছে কিছুই না।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহিলা লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে এসব মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগ জনগণের কল্যাণে কাজ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ জানে এই আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে তারই হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মাধ্যমে। কাজেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়।’
এ সময় বিএনপির জুলুম-অত্যাচারের সঙ্গে একাত্তরের কোনো তফাৎ দেখেন না বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান।
২০০১ পরবর্তী বিএনপি আমলের কথা তুলে ধরে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীর কারো চোখ তুলে নিয়েছে, হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে হাড় গুঁড়া গুঁড়া করে দিয়েছে, জেলে নিয়ে গেছে, একেকটা নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শত শত মামলা দিয়েছে। হয়রানির চরম অবস্থা। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে এ দেশে নারীদের ওপর অত্যাচার করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে, অগ্নিসংযোগ করেছে, বিএনপি জামায়াতকে নিয়ে যখন ক্ষমতায় এলো মনে হলো যেন সেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, সেই অত্যাচার-গণহত্যারই যেন পুনরাবৃত্তি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এদের দুঃশাসন চরম পর্যায়ে। আমরা আওয়ামী লীগ অফিসে যেতে পারতাম না। রাজনীতি করার সুযোগ ছিল না। যুব মহিলা লীগ করার পর সব বাধা অতিক্রম করে আমার এই মেয়েরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছে। এই মেয়েদেরও কিন্তু ওরা ছাড়েনি! একদিকে পুলিশ বাহিনী, আরেকদিকে ছাত্রদল; বিএনপির গুণ্ডা বাহিনী। অকথ্য নির্যাতন করেছে আমাদের মেয়েদের ওপর। তারা যে অত্যাচার করেছে, আমরা কিন্তু তার কিছুই তাদের ওপর করিনি। আমরা প্রতিশোধ নিতে যাইনি, দেশের উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার নিয়ে ২০০৬ সালে খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে গেল। তখন বাংলাদেশের মানুষ সেই ভোট মানেনি।’
২০০৮ সালের নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৮ নির্বাচনে নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি। জাতীয় আন্তর্জাতিক কোনো ভাবে কি, ওই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ওঠেনি। সেই নির্বাচনের ফলাফল অনেকেই ভুলে গেছেন। ৩০০ সিটের নির্বাচনে বিএনপি তখন কয়টা সিট পেয়েছিল? বিএনপি নেতারাই হয়তো ভুলে গেছে। মাত্র ৩০টা সিট পেয়েছিল বিএনপি। জাতীয় পার্টি পায় ২৭টি সিট। ৩টা সিট বেশি ছিল বলে খালেদা লিডার অব দ্য অপজিশন হয়েছিল। জাতীয় পার্টি যদি আর ৩-৪টা সিট পেত তাহলে খালেদা জিয়া লিডার অব অপজিশন হতে পারত না। এটা হলো বাস্তবতা। বিএনপি নেতাদের জিজ্ঞেস করুন, এতো যে লাফালাফি কিসের জন্য? ২০০৮ নির্বাচনে তো এই রেজাল্ট।’
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহিলা লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন থেকে এদিন সহযোগী সংগঠনটির নতুন সভাপতি ও সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। যুব মহিলা লীগের নতুন সভাপতি হয়েছেন আলেয়া সারোয়ার ডেইজি। সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন শারমিন সুলতানা লিলি। নতুন এ নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বক্তব্য দেন যুব মহিলা লীগের বিদায়ী সভাপতি নাজমা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল।