ঢাকামঙ্গলবার, ২৪শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আমি মনকে কিভাবে বুঝ দেই?

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
ডিসেম্বর ১৫, ২০২২ ১২:৪৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

শিশু আয়াতের আগের চারটি জন্মদিনই নানা আয়োজনে-উৎসবে পালন করেছে তার পরিবার। কিন্তু এ বছর জন্মদিনের কেক কাটা, আয়াতকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়া—এর কোনোটিই হয়নি। কারণ যে আয়াতকে ঘিরে আয়োজন, সে-ই তো নেই পৃথিবীতে।

২০১৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর আয়াত জন্মগ্রহণ করে। সে চট্টগ্রামের ইপিজেড থানার বন্দরটিলা এলাকার সোহেল রানা ও সাহেদা আক্তার তামান্না দম্পতির মেয়ে। গতকাল বুধবার ছিল আয়াতের পঞ্চম জন্মদিন। গত ১৪ নভেম্বর মক্তবে পড়তে যাওয়ার সময় সে নিখোঁজ হয়। এর ১০ দিন পর আয়াতদের বাসার ভাড়াটে আবিরকে (১৯) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণের জন্য আয়াতকে অপহরণ করেন আবির। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি আয়াতকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। হত্যার পর আয়াতের লাশ ছয় টুকরা করে সমুদ্র উপকূলে ফেলে দেন তিনি। এর মধ্যে আয়াতের শরীরের তিনটি অংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

গতকাল সকালে ঘুম থেকে উঠেই সোহেল রানা আউটার রিং রোডের আকমল আলী ঘাটসংলগ্ন সাগরপারে যান। সেখানে স্লুইস গেটের ময়লা, কাদায় নেমে আয়াতের শরীরের অংশ খুঁজতে শুরু করেন।

সোহেল রানা বলেন, ‘আজ মেয়ের জন্মদিন। অথচ সে অন্ধকার কবরে ঘুমিয়ে আছে। তা-ও অসম্পূর্ণ শরীরে। বাকি অংশ খুঁজছি। আমি মনকে কিভাবে বুঝ দেই?’
মা তামান্না জানান, বেঁচে থাকলে গতকাল জন্মদিনের কেক কাটা হতো। অথচ আজ সে শুধুই স্মৃতি। বুঝতে শেখার পর থেকেই আয়াত জন্মদিনের আগে বিভিন্ন বায়না ধরত। এ বছরও তার বায়না ছিল জন্মদিন পালনের। সে নানাকে কেকের টাকা পাঠাতেও বলেছিল।

সোহেল রানা জানান, আয়াত ছিল একমাত্র সন্তান। এ কারণে তাকে সবাই আদর করত। তিনি আয়াত হত্যার বিচার চান। আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত লড়বেন তিনি। গতকাল সন্ধ্যায় আয়াতের আত্মার মাগফিরাত কামনায় কোরআন খতম ও দোয়ার আয়োজন করে তার পরিবার।