বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ১০ ডিসেম্বর অবশ্যই ঢাকায় সমাবেশ হবে। এ নিয়ে মনে কোনো দ্বিধা রাখবেন না। সমাবেশ থেকে মানুষ নতুন স্বপ্ন দেখবে। সেখান থেকেই মানুষ নতুন কর্মসূচি নিয়ে আরো তীব্রভাবে মাঠে নামবে।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির পক্ষ থেকে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ, পেশাজীবী ও বিদেশি কূটনীতিকেরা উপস্থিত ছিলেন। এতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, ইরান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘের কূটনীতিকরা ছিলেন। তবে তারা কেউ বক্তব্য দেননি।
বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘জনগণ যখন তাদের দাবি আদায়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নামতে শুরু করেছে, এটাকে বন্ধ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী আরেকটি হীন চক্রান্ত শুরু করেছেন। ‘
‘আমরা ইতিমধ্যে বিভিন্নভাবে খবর পেয়েছি, প্রায় ২০০টি বাস বিভিন্নভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা অসমর্থিত কিছু সূত্র থেকে পাওয়া খবর। ইতিমধ্যে কিছু আলামত আমরা পেয়েছি। ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নামধারী কিছু সন্ত্রাসীকে প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানায় নামিয়ে দিয়ে সেখানে তারা (আওয়ামী লীগ) সন্ত্রাস প্রতিরোধ করবে। তখন থেকেই এ ব্যাপারে আমরা সচেতন হয়েছি, সজাগ হয়েছি। ‘
তিনি আরো বলেন, ‘সেমিনারের মাধ্যমে সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক দল ও কূটনীতিকদের জানাতে চাই, সরকার আবার পুরনো খেলা শুরু করেছে। উদর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর জন্য আবার তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কাজ শুরু করেছেন। ‘
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সরকার ভীত হয়ে এখন আবোলতাবোল বলছে। ১০ তারিখে সরকারকে বিদায় করার জন্য কর্মসূচি আসবে। সরকার টিকে থাকার জন্য সর্বশেষ কামড় দিতে পারে, তবে এবার আর বিএনপিকে দমাতে পারবে না। ‘
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, ‘গত ১৪ বছরে যেভাবে বিরোধীদের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিতে চেয়েছিল সরকার। সেই ভয় এখন নিজেরাই পেয়েছে। মিথ্যাচার করে জনগণের ইচ্ছা প্রতিরোধ করতে পারবে না। এটা বুঝতে পেরেই সমাবেশ বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন ফন্দি করছে। ‘
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা যাতে সমাবেশ করতে না পারি সেজন্য তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কাজে লাগাচ্ছে। তবে আমাদের ভয়ভীতি কেটে গেছে। আমরা আমাদের সমাবেশ করব। এটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। সরকার যত কিছুই করুক না কেন, সমাবেশ আমরা করব। ‘
‘ভায়োলেন্স অ্যান্ড পলিটিক্স অব ব্লেমিং’ শীর্ষক এই গোল টেবিল আলোচনা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থ। এতে বর্তমান সরকারের আমলে ‘সন্ত্রাসের’ বিভিন্ন ঘটনার ওপর একটি তথ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য ফারজানা শারমিন পুতুলের যৌথ সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য দেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমদ, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, জয়নাল আবেদীন, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, গণফোরামের অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ আরো অনেকে।