ঢাকাসোমবার, ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

এবার বন্দুক-রাইফেল দিয়ে শেষ রক্ষা হবে না: ফখরুল

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
ডিসেম্বর ৪, ২০২২ ২:০৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

১০ ডিসেম্বর বিএনপি মহাসমাবেশ করবে শুনেই আওয়ামী লীগ পতন আতঙ্কে ভুগছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আওয়ামী লীগকে দৌউলিয়া রাজনৈতিক দল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবার আর বন্দুক-রাইফেল দিয়ে শেষ রক্ষা হবে না।

শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজশাহীর হাজী মুহম্মদ মহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে (মাদরাসা মাঠ) বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, ১০ তারিখের সমাবেশ নিয়ে সরকারের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। সেদিন নাকি তারা উড়ে যাবে। জনগণের প্রতি তাদের আস্থা নেই। চোরের মন পুলিশ পুলিশ। নয়াপল্টনে এর আগে অনেক সমাবেশ করেছি, তখন তো সমস্যা হয়নি। এখন কেন এত সমস্যা?

মির্জা ফখরুল বলেন, যে দেশে গণতন্ত্রকে প্রতিদিন হত্যা করা হচ্ছে, সেই দেশের সরকার প্রতিদিন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের কথা বলছে। সরকারের বিরুদ্ধে কথা বললেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমরা কোন দেশে বাস করছি, যে দেশে প্রধানমন্ত্রী খারাপ কাজ করলেও সমালোচনা করা যায় না। আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্র একটাই- যেমন করেই হোক ক্ষমতায় বসে থাকা।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন আর কোনও রাজনৈতিক দল নয়। লুটেরাদের সরকারে পরিণত হয়েছে। এরা দেশের টাকা লুট করে বেগমপাড়া আর সেকেন্ড হোম গড়ে তুলছে। এই দানবীয় অনির্বাচিত সরকার অস্তিত্ব সংকটে পড়ে বিরোধীদলকে হামলা-মামলা-গুম-খুন দিয়ে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টায় মেতেছে। কিন্তু পারেনি। এখন তারা ভয়ে আছে। আজ আমরা মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নেমেছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। রাজনীতির কাঠামোকে হত্যা করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য এই সরকার আন্দোলন করেছিল। কিন্তু তারা ক্ষমতায় এসে সেই পদ্ধতি বাতিল করেছে। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে নির্বাচন হবে না। আন্দোলনের মাধ্যমে এই লুটেরা সরকারকে হটিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। এজন্য সবাইকে আন্দোলনে নামতে হবে।

সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীদের গত তিন দিনের কষ্টের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, কনকনে ঠান্ডা বাতাসের মধ্যে খেয়ে না খেয়ে কীসের ভালোবাসায়, কীসের তাগিদে আপনারা তিন দিন ধরে এখানে সময় কাটালেন? একটাই কারণ, আপনারা মুক্তি চান। সেই মুক্তির জন্য দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে আমাদের ৬০০ নেতাকর্মী গুম হয়েছে। এর মধ্যে পাবনার ঈশ্বরদীতে জাকারিয়া পিন্টুসহ ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে তারা। ২৫ জনকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে। এটাই এই সরকারের চরিত্র। এভাবে তারা বিরোধীদলকে নির্মূল করতে চায়। তাতে কি নির্মূল হয়েছে? রাজশাহীর মানুষ কি ভয় পেয়েছে? পায়নি তো। আরও উত্তালে জেগে উঠেছে। এই লড়াইয়ে আমাদের জয়ী হতেই হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, কাটাছেঁড়া সংবিধানের আইন মেনে সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন দিতে হবে।

সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। এতে বক্তব্য রাখেন সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আসনের এমপি হারুন অর রশিদ, বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির সভাপতি এরশাদ আলী ঈশা।