আওয়ামী লীগের জনসভা আজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনসভায় ভাষণ দেবেন। তাকে স্বাগত জানাতে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড ময়দানে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রোববার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী সভাস্থলে আসবেন এবং ৩টার মধ্যেই বক্তব্য শুরু করবেন।
আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ জানান, জনসভায় ১০ লাখ জনসমাগমের টার্গেট করা হয়েছে। এই জনসভার আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার তিন বছর পর ২০১২ সালে এই পলোগ্রাউন্ডে সর্বশেষ জনসভায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। গত ১০ বছরে চট্টগ্রাম নগরীতে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আর কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি হয়নি।
গতকাল শনিবার সকালে দেখা গেছে, পৌনে ৫ লাখ বর্গফুটের পলোগ্রাউন্ড ময়দানের শেষপ্রান্তে নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ। সাড়ে তিন হাজার বর্গফুটের এই মঞ্চে ২০০ জনের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মূল মঞ্চ থেকে ৩০ মিটার সংরক্ষিত রেখে পশ্চিমে গুরুত্বপূর্ণ অতিথিদের বসার জন্য আলাদা মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। পূর্বদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এবং মাঝখানে নারীদের জন্য নির্দিষ্ট স্থান সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।
ঢাকার কলরেডি থেকে আনা হয়েছে ৩০০ মাইক। জনসভাস্থল ছাড়াও নিউমার্কেট, সিআরবি, লালখানবাজার মোড়, টাইগারপাস, দেওয়ানহাট, আগ্রাবাদ হয়ে কদমতলী পর্যন্ত লাগানো হয়েছে মাইক। জনসভাস্থলের বাইরে সড়কে লাগানো হয়েছে বড় পর্দা, যারা ভেতরে ঢুকতে পারবেন না তারা এই পর্দায় দেখবেন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য।
পলোগ্রাউন্ড ময়দানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে পুরো জনসভাস্থল এবং এর আশপাশের এলাকা।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় সাংবাদিকদের জানান, সাড়ে ৭ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রথম ধাপের মোতায়েন শেষ হয়েছে। এছাড়া এসএসএফ, পিজিএফ, সাদা পোশাকের পুলিশ, ইউনিফর্মের পুলিশ, গোয়েন্দা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা মিলে পুরো জনসভাস্থল ঘিরে রেখেছে। সেখানে যারা ঢুকবেন তাদের অবশ্যই আর্চওয়ে পার হতে হবে। এরপর তল্লাশি শেষে সবাইকে ঢুকতে দেওয়া হবে।
আজ রোববার সকাল ৮টা থেকে নগরীর বিভিন্ন সড়কে যানবাহন চলাচলে জরুরি নির্দেশনা দিয়েছে সিএমপি। নগরীর এমএ আজিজ স্টেডিয়াম থেকে রেডিসন ব্লু গোলচত্বর, ইস্পাহানি মোড়, টাইগারপাস হয়ে পলোগ্রাউন্ড সমাবেশস্থল পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে, যা বলবৎ থাকবে প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম ত্যাগের আগ পর্যন্ত। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত আন্তঃজেলার কোনো যাত্রীবাহী বাস শহরে ঢুকতে পারবে না।
নগরীর হাইলেভেল রোড, ওয়াসার মোড়, জমিয়াতুল ফালাহ্ পশ্চিম গেট ইউটার্ন, লালখানবাজার ফ্লাইওভারের নামার মুখ, আলমাস মোড়, চানমারি রোড, ম্যাজিস্ট্রেট কলোনি রোডের মুখ, সিটি করপোরেশন অফিস গলির উভয় মুখ, দেওয়ানহাট ব্রিজের মুখ, টাইগারপাস মোড়, আমবাগান রেলক্রসিং, কাজির দেউড়ি, নেভাল এভিনিউ, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিশন, রেলওয়ে অফিসার্স কলোনি মসজিদ, কুক আউট রেস্টুরেন্ট, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, কাঠের বাংলো, ফ্রান্সিস রোড, আটমার্সিং, এনায়েত বাজার, পুরাতন রেলস্টেশন, কদমতলী মোড়, নিউমার্কেট মোড়, সিটি কলেজ মোড়, অভয়মিত্র ঘাট, নতুন ব্রিজ, আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে ওঠার মুখ, ষোলশহর ২ নম্বর গেট পুলিশ বঙের সামনে, ফ্লাইওভারে ওঠার মুখ, পেনিনসুলা হোটেলের সামনে, শহীদ শাহজাহান মাঠের সামনে, পাঞ্জাবি লেনের মুখ, আগ্রাবাদ বাদামতলী মোড় সড়কে প্রতিবন্ধক ও ডাইভারশন দেওয়া থাকবে।
এদিকে, গতকাল শনিবার দুপুরে জনসভাস্থল পরিদর্শনে যান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও বাহাউদ্দিন নাছিম, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ কেন্দ্রীয় আরও কয়েকজন নেতা।