ঢাকামঙ্গলবার, ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

‘আপনারা ধরছেন চুনোপুঁটি’ দুদককে হাইকোর্ট

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
নভেম্বর ২৭, ২০২২ ৪:২৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

প্রায় এক দশক আগে একটি ব্যাংকের শতকোটি টাকা আত্মসাতের মামলার তদন্ত শেষ না হওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশন -দুদকের ভূমিকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে দুদকের কাছে প্রশ্ন রেখেছেন, অর্থশালীরা পাওয়ারফুল। তাই তারা বিচারের ঊর্ধ্বে কিংবা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকবে? 

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ১১০ কোটি টাকার অর্থ আত্মসাতের মামলায় দুই আসামির জামিন বাতিল প্রশ্নে রুল শুনানিতে গত বৃহস্পতিবার এ প্রশ্ন রাখেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ। এ সময় আদালতে দুদকের আইনজীবী এম এ আজিজ খান ও খুরশীদ আলম খান উপস্থিত ছিলেন।

২০১৩ সালের ২৯ মার্চ বিসমিল্লাহ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খাজা সোলায়মান আনোয়ার চৌধুরীসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা করেন শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ইস্কাটন শাখার ম্যানেজার নকীবুল ইসলাম। এ মামলায় ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর ব্যাংকটির তৎকালীন ডেপুটি ম্যানেজার এএসএম হাসানুল কবীর ও জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মান্নাতুল মাওয়াসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

এ মামলায় ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর এই দুই জনকে জামিন দেন বিচারিক আদালত। পরে সেই জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক। ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করেন। এর মধ্যে ২০১৮ সালে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।

আজ রবিবার ওই দুইজনের জামিন বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুল শুনানিতে হাইকোর্ট দুদকের দুই আইনজীবীকে বলেন, ১১০ কোটি টাকা নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ২০১৩ সালে মামলা হয়েছে। এ মামলাটা এখনো কেন (বিচার) হচ্ছে না। এদের ধরবে কে? আপনারা ধরছেন চুনোপুঁটি।

তখন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, অবশ্যই দুদকের ধরা উচিত। এদের ধরবে…।

এসময় বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক প্রশ্ন রেখে বলেন, কবে ধরবেন? মামলা ২০১৩ সালে। চার্জশীট (অভিযোগপত্র) ২০১৫ সালে। এরপর আবার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন কোর্ট। এত বছর হয়ে গেলো। এগুলোর কি হবে? যারা অর্থশালী পাওয়ারফুল তারা কি বিচারের উর্ধে? এরা কি ধরা ছোঁয়ার বাইরে? আপনারা বিষয়টি সিরিয়াসলি নিতে দুদক চেয়ারম্যানকে বলবেন। এ ধরণের মামলাগুলো কেন শেষ হচ্ছে না, কেন প্রতিবেদন দেওয়া হচ্ছে না? নয় বছর চলে গেছে!

এ সময় এক আসামির আইনজীবী বলেন, আমরা তো ব্যাংকের নিম্ন স্তরের কর্মকর্তা। তখন বিচারক এ আইনজীবীর কাছে প্রশ্ন রাখেন, মামলার প্রধান আসামি খাজা সোলায়মান কে?

জবাবে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, বিসমিল্লাহ গ্রুপের। সে পলাতক। এক মামলায় তারা সাজা হয়েছে। তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারে আপনার কোর্টের আদেশও আছে।

এসময় অন্য একটি মামলায় আদালতে উপস্থিত থাকা অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিনকে উদ্দেশ্য করে আদালত বলেন, দেখেন মামলার অবস্থা! ২০১৩ সালের মামলা এখনো প্রতিবেদন দেয়নি। ১১০ কোটি টাকার মামলা। তখন দুদকের আইনজীবী মামলাটির হালনাগাদ তথ্য জানানোর প্রতিশ্রুতি দেন।