সাংবাদিকদের প্রশ্নের কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা মন্তব্য করতে বাধ্য হন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, ‘এ বিষয়ে তারা (রাষ্ট্রদূতরা) কিছুই জানেন না, কিছু সাংবাদিক তাদের প্রশ্ন করে উত্তর দিতে বাধ্য করেন। ’
সিলেটে বিএনপির গণসমাবেশকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘তাদের আশা ছিল লাখখানেক লোক হওয়ার; কিন্তু তারা খুব কষ্টে আছে। কারণ মানুষজন এত আসেনি।
আজ মঙ্গলবার সকালে সিলেট স্টেডিয়ামে জেলা সাহিত্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান, সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সুব্রত ভৌমিক, অতিরিক্ত ডিআইজি ও সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার ফয়সল মাহমুদ, সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গণমাধ্যমে প্রকাশিত মন্তব্য নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে কিছু কিছু রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তারা কিছু বলতে চান না। কিছু সাংবাদিক তাদের প্রশ্ন করে করে উত্তর দিতে বাধ্য করেন। ’
নিজের ঘরের বিষয় অন্যের কাছে বলাটা লজ্জাজনক বলেও এ সময় তিনি মন্তব্য করেন। তিনি এ বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের আরো যত্নশীল হওয়ার অনুরোধ জানান।
তিনি আরো বলেন, ‘অন্যান্য দেশের সংবাদমাধ্যম তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিদেশিদের মতামত নেয় না বা প্রশ্ন করে না। আমি যখন আমেরিকায় শিক্ষক ছিলাম তখন সবগুলো মিডিয়া আমার বক্তব্য নিত। এরপর সরকার যখন আমাকে রাষ্ট্রদূত করল তখন আর মিডিয়াগুলো আমার কাছে তাদের দেশ সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন করেনি। দোষটা আমাদের মিডিয়ার, আমাদের কালচারের। আমরা বিদেশিদের এ সুযোগ দিয়েছি। এটি ঠিক হয়নি। ’
বাংলাদেশের রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা একাধিক দেশ, এমনকি জাপানের রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যে সরকার বিরক্তি প্রকাশ করেছে, এমনকি একাধিক দূতের কাছে ব্যাখ্যাও দাবি করেছে।
পুলিশের চোখে স্প্রে করে আদালত এলাকা থেকে জঙ্গি ছিনতাই প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, ‘জঙ্গি পালানোর বিষয়টি দুঃখজনক। তবে এ জন্য দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়নি। ’ এটিকে দুর্ঘটনা অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘এটি একটি দুর্ঘটনা, পৃথিবীর সব দেশে এ রকম ঘটনা ঘটে। আমাদের পুলিশ বাহিনী যথেষ্ট তৎপর। তারা কাজ করছে। আসামিদের ধরে ফেলবে। ’
সিলেটে ১৯ নভেম্বর হওয়া বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘শুনেছি তাদের লক্ষ্য ছিল লাখখানেক লোক হবে। কিন্তু তারা খুব মনঃকষ্টে আছে। মানুষজন অত আসেনি। আর তাদের যে একটা আশা ছিল এখান থেকে বিরাট একটা আন্দোলন শুরু করবে। সেটা হয়নি। ওদের জিজ্ঞেস করেন তারা কিভাবে আশাহত হয়েছে। ’
জনগণ আবারও আওয়ামী লীগকে বেছে নেবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তবে আমি জানি বাংলাদেশের জনগণ অত্যন্ত সজ্ঞান। তারা যখন নিজের ভোটটা দেয়, জ্ঞানে দেয়। গত ১৪ বছরে শেখ হাসিনা সরকার এ দেশের জনগণের মঙ্গলে অনেক অনেক করেছেন। এ দেশের অবস্থান অনেক উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। আমাদের বরং শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানানো উচিত, কৃতজ্ঞতা জানানো উচিত। ’