বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের দু-তিন দিন আগে থেকেই সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশস্থলে দলে দলে আসছেন বিভিন্ন জেলার নেতা-কর্মীরা। বুকে ধানের শীষের ব্যাজ পরে হবিগঞ্জ থেকে সেখানে এসেছেন আবদুল আহাদ (৬৫)। হাতে কাপড়ের পুঁটলি নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে মাঠের উত্তর পাশে এক জায়গায় বসে সমাবেশস্থলে আসা খণ্ড খণ্ড মিছিল দেখছিলেন তিনি। সেখানে তাঁর সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের।
আবদুল আহাদ বলেন, হবিগঞ্জের চৌধুরী বাজার এলাকায় তাঁর বাড়ি। ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। কাগজে-কলমে বিএনপির কর্মী না হলেও তিনি সব সময় ধানের শীষে ভোট দেন বলে জানান।
এত দূর থেকে দুই দিন আগেই সমাবেশস্থলে আসার কারণ জানিয়ে আবদুল আহাদ বলেন, ‘ইচ্ছা ছিল শুক্রবার রাতে গাড়িতে উঠে শনিবারে ভোরে সিলেটে পৌঁছে সমাবেশে যোগ দেব। একসঙ্গে আসব বলে হবিগঞ্জ পৌরসভার পরিচিত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে রেখেছিলাম। কিন্তু মানুষ আটকাতে শুক্রবার থেকে পরিবহন ধর্মঘট দিয়ে দিসে। ধর্মঘট দেওয়ার কারণে হবিগঞ্জ থেকে আমরা প্রায় ৭০০ মানুষ একসঙ্গে আজ রাতেই চলে এসেছি। আরও অনেক মানুষ পথে আছে।’
হাতের কাপড়ের পুঁটলি দেখিয়ে আবদুল আহাদ বলেন, এখানে শীতের কাপড় আছে। এগুলো পরে রাত কাটাবেন। আর সামান্য কিছু খেলেই চলবে। আগে আসার কারণে থাকা ও খাওয়ার কিছু অসুবিধা হবে কিন্তু মানুষ আসবেই, আটকাবে না। তিনি বলেন, ‘কষ্টের কথা কত বলব। এই সরকার ভালো না। সবকিছুর দাম বাড়িয়ে গরিব মানুষরে কষ্টে রাখছে। বলছিল ১০ টাকা চালের কেজি খাওয়াবে। এখন ৬০ টাকা চালের কেজি খাচ্ছি। ডালের কেজি ১২০ টাকা, তৈল ২০০ টাকা। সংসারে সাতজন মানুষ। সারা দিন ভ্যান চালিয়ে ৫০০-৬০০ টাকা হয়। ইচ্ছা করলেও ভালো কিছু খেতে পারি না টাকার অভাবে। আলুভাজি আর ডালের পানি দিয়ে খেয়ে কোনোরকমে বেঁচে আছি।
আবদুল আহাদ বলেন, ‘এই সরকার বদলাতে হবে। আগের বিএনপি সরকার গরিব মানুষরে এত কষ্ট দেয় নাই। আমার কাছে বিএনপি সরকার অনেক ভালো। বিগত দুইটা জাতীয় নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারিনি। গিয়ে দেখি অন্য কেউ আমার ভোট দিয়ে দিছে। ভোট না দিতে পারাও একটা কষ্ট। সেই কষ্টে সমাবেশে এসেছি।’