ঢাকাবৃহস্পতিবার, ১০ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ভয়ের কিছু নেই, দ্রব্যমূল্য আবার স্বাভাবিক হবে

নিউজ ডেস্ক | সিটিজি পোস্ট
নভেম্বর ৪, ২০২২ ৮:০৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বৈশ্বিক সংকটের কারণে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় দেশে সব ধরনের ভোগ্য পণ্যের দাম বাড়ছে। এতে কষ্টে আছে সাধারণ ভোক্তারা। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, দ্রব্যমূল্য আবার স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের চতুর্থ সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

টিপু মুনশি বলেন, বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় চিনিতে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফা করছেন। গ্যাসের সরবরাহ বাড়লে সরকারের নির্ধারিত দামে চিনি বিক্রি হবে। শিগগিরই চিনি উৎপাদনে শিল্প-কারখানায় গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তিনি বলেন, আগামী জানুয়ারি পর্যন্ত চলার মতো পর্যাপ্ত চিনি দেশে মজুদ রয়েছে। এর পরও এখন উৎপাদন বাড়াতে জোর দিচ্ছে সরকার। এ ক্ষেত্রে গাড়ি বা যানবাহনে গ্যাসের সরবরাহ কমিয়ে শিল্প-কারখানায় দেওয়া যায় কি না, সেটাও বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আটার বাজারের অস্থিরতা দূর করতে রাশিয়া-ইউক্রেনের বাইরে গম আমদানির জন্য নতুন উৎস খোঁজা হচ্ছে। কানাডা থেকে গম আসা শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আটা ও ময়দার বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

টিপু মুনশি বলেন, সরকার নির্ধারিত দাম ৯৫ টাকায় বাজারে চিনি বিক্রি না হওয়ায় সাধারণ মানুষের কষ্ট বেড়েছে। চিনিসহ অন্যান্য পণ্যের দামও চড়া। মূলত বৈশ্বিক সংকটের কারণে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় দেশে সব ধরনের ভোগ্য পণ্যের দাম বাড়ছে। এতে কষ্টে আছে সাধারণ ভোক্তারা।

মন্ত্রী বলেন, চিনির সরবরাহ যদি আরো কমে যায় তাহলে সেখানে কিন্তু ভয় আছে। গ্যাসের সাপ্লাই অপ্রতুলতার কারণে মিল মালিকরা ৬৬ শতাংশের বেশি চিনি উৎপাদন করতে পারছেন না। অনেক চিনি গুদামে পড়ে আছে। সেটা প্রক্রিয়াকরণ করতে পারলে বাজারে আসবে। যারা গ্যাসের বিষয়টি দেখে তারা বলছে, পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটছে। বিদ্যুতের অবস্থা ভালো হবে। এ কারণে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, প্রত্যেক মানুষের জীবনে কখনো ভালো সময় থাকে, কখনো খারাপ সময় থাকে। প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেছেন—সামনে দুর্ভিক্ষ হতে পারে, খাদ্যের অভাব হতে পারে; সে চিন্তা করেই কিন্তু উনি বারবার বলছেন। উনি সব সময় অনেক আগাম চিন্তা করেন, যাতে সমস্যা না হয়।

সয়াবিন তেলের দাম নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সয়াবিন তেলের বিষয়টি আমাদের ট্যারিফ কমিশন ঠিক করবে। আমি আজ এখনই বলেছি, খুব শিগগির আবার বসে পুরো জিনিসটা অ্যাসেস করে, স্টাডি করে তারা দাম নির্ধারণ করবে। ’ আটা-ময়দার বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ পণ্যটির দাম এখন চড়া। তবে রাশিয়া-ইউক্রেনের পাশাপাশি কানাডা থেকে গম আমদানি শুরু হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য উৎস খোঁজা হচ্ছে। বিকল্প উৎস থেকে আমদানি করে দেশে সরবরাহ বাড়িয়ে দাম কমিয়ে আনা হবে।

টাস্কফোর্সের সভার বিষয়টি তুলে ধরে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গমের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। এটা নিয়ে আমাদের এক বড় ব্যবসায়ী বললেন, তাঁর একটি জাহাজ তুরস্কে আটকে ছিল। সেটা রওনা হয়েছে। সেখানে ৫৫ হাজার টন গম রয়েছে। অর্থাৎ গমেরও সরবরাহ ঠিক হয়ে যাবে। তবে ইউক্রেন হলো আমাদের প্রধান সরবরাহকারী দেশ। সেখান থেকে আনতে পারলে গমের বাজার স্থিতিশীল হবে। ’

এদিকে ডলারের দামের কারণে বিশ্ববাজারে রড ও সিমেন্টের দাম কমলেও সে সুবিধা দেশে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। সভায় ব্যবসায়ীরা যানবাহনে যে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে, সেটা বন্ধ করে শিল্প খাতে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। এ বিষয়ে টিপু মুনশি বলেন, আলোচনায় এ কথাগুলো এসেছে। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বিবেচনায় নেবে।