নারী টিভি উপস্থাপদের জন্য বাধ্যতামূলক নেকাবসহ আফগান সাংবাদিকদের ওপর ধারাবাহিকভাবে বিধিনিষেধ আরোপ করার পর, তালিবান এখন বিদেশী সাংবাদিকদের লক্ষ্যে পরিণত করছে। যে সব সাংবাদিককে তারা তাদের শাসনের জন্য পক্ষপাতদুষ্ট ও সমালোচনামূলক বলে মনে করছে, এখন তাদের লক্ষ্যে পরিণত করছে তালিবান।
সর্বসাম্প্রতিক পদক্ষেপে তালিবান কর্তৃপক্ষ স্টেফানি গ্লিন্সকি নামে একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকের আফগানিস্তানে ফিরে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। গ্লিন্সকি গত ৪ বছর ধরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার জন্য আফগানিস্তানে সংবাদ সংগ্রহ করেছেন। সম্প্রতি তিনি কিছু আফগান নারীর তালিবান শাসন থেকে পালিয়ে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষার বিষয়ে প্রতিবেদন করেন।
গ্লিন্সকি বলেছেন, তালিবান তার খবরের উৎস সম্পর্কে হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে তথ্য চেয়েছিল। কিন্তু তিনি সে আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি এটা করেন কারণ তিনি ভয় পেয়েছিলেন যে,তালিবানকে তথ্য দিলে তার প্রতিবেদনের জন্য তথ্যদাতারা বিপদে পড়তে পারেন এবং এই পদক্ষেপ হবে সাংবাদিকতার সততার সাথে আপস করা।
এ ব্যাপারে মন্তব্য জানার জন্য ভয়েস অফ আমেরিকা তালিবানের প্রধান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র আব্দুল কাহার বলখির সাথে যোগাযোগ করেছে।কিন্তু কেউই ভয়েস অফ আমেরিকার ফোনের জবাব দেননি।
আগস্টে তালিবান ভারতীয় একটি চ্যানেলের জন্য কাজ করা একজন পাকিস্তানি সাংবাদিককে আটক করেছিল। এই সাংবাদিক তখন কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলার স্থান, যেখানে আল-কায়েদা নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরি নিহত হয়েছিল, সেখানকার চিত্র ধারণ করছিলেন।
তালিবান কর্মকর্তারা বলছেন, তারা ইসলামের আওতার মধ্যে একটি অবাধ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে, স্বাধীন পর্যবেক্ষকরা উল্লেখ করছেন যে তালিবান-এর কর্মকাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে তারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সীমিত করছে। আর তারা সাংবাদিকদের ওপর আরও বেশি কড়াকড়ি আরোপ করছে।
আফগানিস্তানে তথ্য প্রাপ্তি আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। ফলে, গুজব এবং অপতথ্য এখন দেশটির প্রকৃত ঘটনাগুলোকে বিকৃত করে বর্ণনা করছে।
ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনের কলামিস্ট লিন ও’ডোনেল-এর মতে, সাংবাদিকদের উচিত তালিবানের মতো দলকে তাদের কর্মের জন্য জবাবদিহিতায় নিয়ে আসা। লিন ও’ডোনেল গত জুলাই মাসে তালিবানের হাতে অল্প সময়ের জন্য আটক ছিলেন।