গতকাল বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর পোলোগ্রাউন্ড মাঠে বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মঞ্চে থাকা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতাদের সামনে সমাবেশে হুম্মাম কাদের চৌধুরী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ সরকারকে বলে দিতে চাই, ক্ষমতা ছাড়ার পর একা বাড়িতে যেতে পারবেন না। বাধ্য করব প্রত্যেকটা শহীদের বাড়িতে গিয়ে ক্ষমা চাইতে যেতে। ’
পরে তিনি ‘নারায়ে তাকবির’ স্লোগান দিয়ে বক্তব্য শেষ করেন।
যে স্লোগান বিএনপি দলীয়ভাবে ব্যবহার করে না। হুম্মাম কাদের চৌধুরী একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি হওয়া সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ছেলে।
হুম্মাম কাদের চৌধুরীর এই স্লোগান নিয়ে গতকাল সারা দিন চট্টগ্রামে বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা চলে। তার বক্তব্য ও স্লোগানের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। চট্টগ্রাম বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মীরাও এই স্লোগানের বিরোধিতা করেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সমাবেশে হুম্মাম কাদের চৌধুরীর বক্তব্য-স্লোগানের সঙ্গে দলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করে বলেন, ‘এগুলো তার (হুম্মাম) ব্যক্তিগত বক্তব্য। এগুলোর সঙ্গে দলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এসব বক্তব্য বিএনপির রাজনীতির অংশ নয়। ’
আজ বৃহস্পতিবার নগরীর নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ে সমাবেশ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ পাশে ছিলেন।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘নারায়ে তাকবির আমাদের সাংগঠনিক স্লোগান নয়। পুরো সমাবেশে এই স্লোগান আর কোনো নেতা দেননি। উনি (হুম্মাম) দিয়েছেন উনার ব্যক্তিগত জায়গা থেকে। দেওয়ার আগে উনি নিজেই বলেছেন যে বাবার স্লোগানটা দিচ্ছি। তাই ব্যক্তিগত চিন্তা থেকে হয়তো উনি দিয়েছেন। ’
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর একাত্তরের মানবতাবিরোধীদের বিচার শুরু হলে সালাহউদ্দিন কাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় প্রমাণিত হওয়ায় সাকা চৌধুরীর ফাঁসির রায় দেন আদালত। ২০১৫ সালের ২২ নভেম্বর তার ফাঁসির রায় কার্যকর হয়।
হুম্মাম কাদের চৌধুরীর চাচা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান পদে আছেন। তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে সক্রিয় নন।