আদালতের আদেশ অগ্রাহ্য করে পুলিশের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় নগরীর চান্দগাঁও থানা এলাকায় ভূমিদস্যু মাহবুবুল আলম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী রাতের আধাঁরে ফিল্মি স্টাইলে জায়গা দখল, মিথ্যা মামলায় হয়রানির ও আটক করার অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার দিকে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার ১৪নং রোডের খতিববাড়ি মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় এঘটনা ঘটেছে জানিয়েছেন আদনান আল রাইছি।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে আদালতের আদেশ অগ্রাহ্য করে পুলিশের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় নগরীর চান্দগাঁও থানা এলাকায় ভূমিদস্যু মাহবুবুল আলম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী রাতের আধাঁরে ফিল্মি স্টাইলে জায়গা দখল, মিথ্যা মামলায় হয়রানির প্রতিবাদে আয়োজিত সংংবাদ সম্মেলনে জিন্নু রাইন প্রপার্টিজ প্রা. লিমিটেডের লিগ্যাল অফিসার আদনান আল রাইছি এসব কথা বলেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ৫ সেপ্টেম্বর সোমবার রাত ৯টার সময় থানা পুলিশের উপস্থিতিতে মাহবুবুল আলম ও এস এম আবুল কাশেমদের নিয়ে থানায় একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে চলমান সিভিল মামলায় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে উভয়পক্ষকে স্থিতিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য চান্দঁগাও থানার এসআই আবদুল মোনাফ নির্দেশ দেন। কিন্তু আদালত ও পুলিশের নিষেধাজ্ঞাকে অগ্রাহ্য করে সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে অতর্র্কিতভাবে সন্ত্রাসী মাহবুবুল আলম তার দলবল নিয়ে হামলা করে। হামলার পরে পুলিশের সহযোগিতায় জায়গার কেয়ারটেকার শানুসহ সেখানে দায়িত্বরত দারোয়ানদের থানায় নিয়ে যায়। কোন কারণ ছাড়াই তাদের আটক করে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে রাতেই গ্রেফতার দেখানো হয়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এসময় থানায় কেন তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা জানতে স্বজনরা থানায় গেলে তাদের কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগের কথা না বলে পুলিশ তাদেরকে থানা থেকে বের করে দেয়। পরেরদিন মঙ্গলবার সকালে পুনরায় কেয়ারটেকার শানুর স্বজনরা আবারও থানায় গেলে চুরি করার অভিযোগে শানুসহ দারোয়ানদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়। এসময় পুলিশ মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে থানায় জায়গার মূল মালিক এস এম আবুল কাশেমসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০জনকে আসামি করে একটি মামলা (যার নাম্বার-৮(৯) ২২) দায়ের করেন।
ঘটনার দৃশ্যপট বর্ণনা করে তিনি বলেন, সোমবার রাতে জায়গায় থাকা ভাড়াটিয়ারা ঘুমাচ্ছে। ঘুমের মধ্যেই অতর্কিতভাবে মাহবুবুল আলম তার দলবল নিয়ে আমাদের বাসায় হামলা করে। এসময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও আমার কেউ বাঁচাতে আসেনি। মারধরের এক পর্যায়ে পুলিশ ও মাহবুবুল আলম জায়গাার কেয়ারটেকার মোছাম্মৎ শানু ও সিকিউরিটি গার্ডদের ধরে থানায় নিয়ে যায়। কি কারণে বা কোন অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে পুলিশের কাছে জানতে চাইলেও তারা কোন সুদত্তর দেয়নি। এ ঘটনার পরদিন ৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এস এম আবুল কাশেমের মালিকানাধীন জায়গার ভাড়াটিয়াদের জোর করে বের করে দিয়ে মাহবুবুল আলম ও তার ৬০-৭০ জনের একটি সন্ত্রাসী দলবল নিয়ে রাতের মধ্যেই জায়গা দখল করে অবকাঠামো নির্মাণ করেন।
তিনি বলেন, বলেন, খরিদাসূত্রে এই জায়গার মালিক আমি। কিন্তু সন্ত্রাসী মাহবুবুল আলম গং গত কয়েক বছর ধরে ভুয়া দলিল দেখিয়ে জায়গা দখল করার পায়তারা শুরু করে। এসব বিষয়ে ২০২১ সালে চট্টগ্রামের প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে একটি অপর মোকাদ্দমা মামলা দায়ের করা হয়। যার নাম্বার নং-২৩৮/২১। ওই মামলায় আদালত জায়গার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। আদালতের সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পুলিশে যোগসাজশে মঙ্গলবার রাতে সন্ত্রাসী নিয়ে জায়গা দখল করেছে। গত ১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার চান্দগাঁও থানায় মাহবুবুল আলম জায়গা দখল করে নেওয়ার জন্য আমাকে ও আমার জায়গার কেয়ারটেকার, দারোয়ানদের হুমকি দেওয়ার বিষয়ে রিখিত অভিযোগ দিলেও থানায় সেই অভিযোগটি আমলে নেয়নি। এখন থানা পুলিশ মাহবুবুল আলমের সাথে মিলে আমার জায়গা জোর দখল করেছে। আমি প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ট বিচার দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এস এম জসিম উদ্দীন, মোহাম্মদ সেলিম, এস এম নাসির উদ্দীন, এস এম ফয়সাল, কেয়ারটেকার মোছাম্মৎ শানুুর মেয়ে সাদিয়া আক্তারসহ ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য্যরা উপস্থিত ছিলেন।