ঢাকারবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

চা এবং চট্টগ্রাম – রুবাইয়াহ হক

রুবাইয়াহ হক মৃত্তিকা | সিটিজি পোস্ট
সেপ্টেম্বর ১, ২০২২ ১:৫৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

যেই চা নিয়ে আজ এত আলাপ এত আলোচনা সেই চায়ের সাথে চট্টগ্রামের ইতিহাস কি আমরা জানি!
চলেন তাহলে জেনে নিই-

ঐতিহাসিকভাবে, বঙ্গ চা অশ্ব সড়কের শেষপ্রান্ত ছিল, যা এই উপমহাদেশকে চীনের প্রথম দিককার চা-উৎপাদনকারী অঞ্চল ইউন্নানের সাথে সংযুক্ত করেছিল। অতীশ দীপঙ্করকে প্রথম দিককার একজন বাঙ্গালি চা পানকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বঙ্গ প্রদেশে কালো চায়ের চাষ ব্রিটিশ শাসনামলের সময় শুরু হয়েছিল।ইউরোপীয় ব্যবসায়ীরা ১৮৪০ সালে এই উপমহাদেশের সর্বপ্রথম চা বাগান বন্দর নগরী চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠা করে, যখন কলকাতা বোটানিক্যাল গার্ডেন থেকে চীনা চায়ের গাছ এনে চট্টগ্রাম ক্লাবের পাশে রোপণ করা হয়। ১৮৪৩ সালে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তীরে প্রথম চা তৈরি এবং পান করা হয়।বাণিজ্যিকভাবে প্রথম চা চাষ শুরু হয় ১৮৫৭ সালে সিলেটের মালনীছড়া চা বাগানে। সিলেট অঞ্চলের সুরমা নদী উপত্যকা পূর্ব বাংলার চা উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পায়। চা চাষ নিম্ন ত্রিপুরা (বর্তমান কুমিল্লা) এবং উত্তর বঙ্গের পঞ্চগড়েও শুরু হয়। পঞ্চগড় হচ্ছে বাংলাদেশের তৃতীয় চা অঞ্চল এবং সবথেকে চাহিদাপূর্ণ চা এখানে।

পঞ্চগড়ের একটি চা বাগান
চা ব্রিটিশ বাংলার একটি উল্লেখযোগ্য রপ্তানিপণ্য ছিল। সুরমা এবং ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার চা চাষিদের কাছ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের রপ্তানিকারকদের কাছে চা পৌঁছিয়ে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে এই শিল্পের জীবনরেখা হিসেবে সেবা দিয়ে গেছে।
চট্টগ্রাম চা নিলাম ১৯৪৯ সালে ব্রিটিশ এবং অস্ট্রেলিয়ার ব্যবসায়ীরা স্থাপন করে। জেমস ফিনলে এবং ডাঙ্কান ব্রাদার্সের মতো ব্রিটিশ কোম্পানি এক সময় এই শিল্পের আধিপত্য করেছে। ইস্পাহানী পরিবারও এই শিল্পের এক বিখ্যাত অংশীদার ছিল।

চট্টগ্রামে চা চাষের ঐতিহ্য প্রায় ২০০ বছরের। সারা দেশের মধ্যে চট্টগ্রামেই প্রথম চা চাষ শুরু হয়, সেটা ১৮৪০ সালের ঘটনা। চট্টগ্রামের পাইওনিয়ার পাহাড়, টাইগার পাস, লালখান বাজার পুলিশ ক্যাম্প এলাকার উপত্যকা নিয়ে পরীক্ষামূলক প্রথম চা–বাগানের গোড়াপত্তন হয়। চট্টগ্রামের ২০০ বছরের ইতিহাসে যেন ছেদ না পড়ে। অন্যান্য অনেক খাতের মতো চায়ের ক্ষেত্রেও যেন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অনন্য অবদান রাখে, সেটাই সবার আশা।