সারা বিশ্ব জুড়ে এখন একটা কথার খুব বেশি চর্চা হয় তা হলো নারী অধিকার। নারীর অধিকার নিয়ে কথা বলা উচিত এবং অবশ্যই উচিত যেহেতু আমাদের সমাজে নারীরা অবহেলিত শুধু আমাদের সমাজেই না সারা পৃথিবী জুড়েই কিন্তু নারীর অধিকার ক্ষুন্ন হচ্ছে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত কিন্তু শুধুই নারীর অধিকারের কথা বলে আমরা বর্তমানে পুরুষদের খুব অবহেলা করা শুরু করেছি। একটি সমাজব্যবস্থায় নারীর যেমন অধিকার থাকে তেমন একজন পুরুষের ও আছে সেটা আমরা হয়তো প্রায়ই ভুলতেই বসেছি। আমরা শুধু নারীর সন্তান জন্মদানের সময়ের কষ্টটাই দেখলাম, দেখলাম মায়েদের কষ্ট, দেখলাম একটা মেয়ে কিভাবে নিজের জীবনকে ত্যাগ করেছে অন্য ছেলের জন্য ইত্যাদি ইত্যাদি আরো কত কি।
এগুলো সব দৃশ্যমান তাই হয়তো সবাই নারীদের নিয়ে চিন্তিত। ঠিক আছে এই চিন্তাটাও খুব দরকার, তবে আমাদের কাছে কোনো পুরুষের স্যাক্রিফাইসটা কি আসলেই দৃশ্যমান? কারন ছেলেরা নিজেদের স্যাক্রিফাইস করে ঘরের বাহিরে। রাত দিন কষ্ট করে টাকা উপার্জন করে সেই সব নারীর জন্য যারা নিজেদের অধিকার এর কথা চিন্তা করে পুরুষদের অবহেলিত করে।
আচ্ছা একবার ভেবে দেখুন একটা পুরুষ কষ্ট করে টাকাটা উপার্জন করে কার জন্য খরচ করে? আমি সবসময় দেখে এসেছি আমার বাবাকে যিনি টাকা উপার্জন করে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আর তার সবটুকুই খরচ করেছেন তার স্ত্রী সন্তানের পিছনে। তেমনই দেখেছি আমার ভাই চাচা মামাদের। সবাই নিজের কষ্ট করে কামাই করা টাকাটার এক অংশ ও নিজের জন্য খরচ করতে খুব কম দেখেছি। ছেলেদের ও অনেক শখ আছে কিন্তু পরিবার এর দিকে তাকিয়ে সেই শখ কে চাপা দিতে দেখেছি।
একজন সন্তানের পিছনে বাবার কত বড় দায়িত্ব তা কোনোদিন বলে শেষ করা যাবেনা।একজন বাবা সারাদিন খেটে খুটে ঘরে আসে একমাত্র সন্তানের খুশির জন্য। নিজের খুশির আগে সন্তানের খুশিকে স্ত্রীর খুশিকে প্রাধান্য দেই একজন বাবা একজন পুরুষ।
আমাদের সমাজে নারীবাদিরা এমন ভাবে নারী অধিকার খুঁজে যে পুরুষ এর কোনো অবদানই নেই।নারী অধিকার নারী অধিকার বলে বলে পুরুষদের দমিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।পুরুষের অবদান সবাই ভুলে যাচ্ছে।
ঠিক আছে আমাদের ধর্মেও একজন মা কে বাবার আগে অবস্থান দেয়া হয়েছে তার মানে এই না যে বাবা কে অবহেলিত করে রাখতে বলেছে।
এখন নারীবাদিদের এমন একটা অবস্থা যে তারা পুরুষদের সহ্যই করতে পারেননা।সবসময়ই মাথায় রাখতে হবে যে নারী-পুরুষ একে অপরের পরিপূরক,প্রতিপক্ষ নয়। নারীর দায়িত্ব এক, পুরুষের দায়িত্ব এক। কিন্তু কারো দায়িত্ব একইরকম নয়। দুজনের দায়িত্ব একই ধরনের নয়। কিন্তু ওজন করতে গেলে কারো দায়িত্ব কারো চাইতে কম নয়।
তাই যতদিন নারী-পুরুষ তাদের একে অপরের পরিপূরক হিসেবে না দেখে প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখবে ততদিন নারীর জন্যে কিংবা পুরুষের জন্যে, কারো জন্যেই কল্যান বয়ে আনবেনা।
আমার মতে আমি একজন পুরুষকে সবসময়ই দেখেছি সে একা।তার সঙ্গ দেওয়ার মত আসলে খুব কম মানুষ থাকে। একজন পুরুষ তার স্ত্রীর কাছ থেকেও অনেক সময় সঙ্গ বা সাপোর্ট পায়না। একজন পুরুষকে অন্যের জন্য শুধু করে যেতেই দেখেছি হোক সেটা নিম্নবিত্তের কেউ অথবা হোক সে উচ্চবিত্ত এর কেউ। মানসিক ভাবে শান্তি খুব কম পুরুষ মানুষই পায়। আর যারা পায় তারা আসলেই খুব ভাগ্যবান।
আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেন, তারাও (নারী) তোমাদের ভূষণ, তোমরাও (পুরুষ) তাদের ভূষণ (সূরা বাকারা; ১৮৭)।