নাম তার মমতাজ বেগম। কখনো তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক, কখনো সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, আবার কখনো বেসামরিক বিমান ও পরিবহন মন্ত্রীর আত্মীয়। এসব পরিচয় তুলে ধরে চাকরি দেওয়ার কথা বলে শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার (২৫ জুলাই) চট্টগ্রামের আকবরশাহ থানার নন্দন হাউজিং সোসাইটি থেকে মমতাজ বেগমকে আটক করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি-উত্তর) মুহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, প্রায় শতাধিক ব্যক্তিকে বিমান বন্দর, বিমানবালাসহ নানান পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেন মমতাজ। দীর্ঘদিন তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে আকবর শাহ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মমতাজের এই চক্রের সঙ্গে বিমান বাংলাদেশের কেউ জড়িত আছেন কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রতারণার কৌশল হিসেবে মমতাজ বিমান বাংলাদেশের আইডি কার্ড, বিমানবালাদের পোশাক ও টাই সরবরাহ, অঙ্গীকারনামা গ্রহণ, চাকরিতে যোগদান ফরম, বিমান সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ, টিআইএন সার্টিফিকেট তৈরি এবং বিভিন্ন রেজিষ্ট্রারে স্বাক্ষর, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, মেডিকেল চেকআপ ইত্যাদি ব্যবহার করতেন।
তিনি বলেন, প্রতারণার অংশ হিসেবে চাকরি প্রত্যাশী অনেককে চট্টগ্রাম থেকে বিমানযোগে ঢাকায় নিয়ে যান। সেখানে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিমানের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিতেন।
তিনি বলেন, চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতেন মমতাজ। টাকা নেওয়ার আগ পর্যন্ত মোবাইল এবং সরাসরি যোগাযোগ অব্যাহত রাখতেন মমতাজ। টাকা নেওয়ার পর মোবাইল নম্বর বন্ধ করে ফেলতেন। এমনকি বাসাও পরিবর্তন করে ফেলতেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রতারণার অভিযোগে মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে নগরীর বন্দর থানায় দুটি মামলা দায়ের হয়, যেগুলো আদালতে বিচারাধীন। ২০২০ সালে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে জেল-হাজতে সোপর্দ করে। জামিনে মুক্তি পেয়ে তিনি পুনরায় প্রতারণা শুরু করেন।